চলতি রবি মৌসুমে পাবনার বেড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে মাষকলাই চাষ করা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে কৃষক। চর সাঁড়াশিয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সাত্তার বেপারি, চর নাগদাহ গ্রামের কৃষক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদ মোল্লা, চর নাকালিয়া গ্রামের আজিজ মোল্লা, চর সাফুল্লা গ্রামের গজনবী মোল্লাসহ চরাঞ্চলের মাষকলাই চাষিরা বলেন, উপজেলার চরাঞ্চল চর নাকালিয়া, চর সাঁড়াশিয়া, হাটাইল- আড়ালিয়া, চর পাইখন্দ, চর নাগদাহ, চর সাফুল্লা মৌজাসহ বিভিন্ন চর এলাকায় বেলে দোআঁশ মাটিতে অর্থকরী ডাল জাতীয় ফসল মাষকলাই ও তৈল জাতীয় ফসল চিনাবাদাম প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয়ে থাকে।
কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রতিবছর বর্ষার পানি জমি থেকে নেমে যাওয়ার পর আশ্বিন মাসের শুরু থেকেই মাষকলাই ফসল বোনার মৌসুম শুরু হয়ে যায়। চাষিরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকে ক্ষেত থেকে পানি নেমে গেলেই মাষকলাই বীজ হাট-বাজার থেকে সংগ্রহ করে বোনা বা ছিটানোর মনোনিবেশ করেন তারা।
বর্ষার পানিতে জমি প্লাবিত হয়ে পড়লে জমি উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে চাষের উপযোগী হয়ে ওঠে। জমি থেকে পানি নেমে গেলেই চরাঞ্চলের কয়েক হাজার বিঘা জমিতেই মাষকলাই বীজ ছিটায়ে চাষাবাদের কাজ শেষ করা হয়। আর সামান্য কিছু জমিতে লাঙ্গল বা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে বোনা হয়।
কৃষকরা আরো জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার উঁচু জমিতে বর্ষা ও বন্যার পানি উঠেনি। এ কারণে অনেক আবাদি জমিতে, ছন, বন মলহানি আগাছা জঙ্গলে ভরে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু এলাকার জমি বর্ষার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল এ কারণে ওই সব জমিগুলোতেই এবার মাষকলাই চাষ করলে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু উঁচু জমিগুলোতে মাষকলাই চাষ করলে উৎপাদন ভালো না হওয়ার শঙ্কায় ভুগছে কৃষক। যার ফলে এ বছর অনেক চাষি মাষকলাই চাষ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। উঁচু জমিতে পানি না ওঠার ফলে মাষকলাই চাষের জমিগুলো চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মাষকলাই চাষে সাহস পাচ্ছে না এবং অনেকেই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না এ বছর।
তাই চলতি রবি মৌসুমে চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অনেক মাষকলাই চাষের জমি এ মৌসুমে অনাবাদি থাকার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত কবির বলেন, এ বছর রবি মৌসুমে বেড়া উপজেলায় মাষকলাই চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ১শ হেক্টর জমি। এর মধ্যে চরাঞ্চলেই ১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, জমি অনাবাদি থাকার যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা তা ঠিক নয়। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি রবি মৌসুমে মাষকলাইসহ সবধরনের ফসলাদির চাষাবাদ ভালো হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।
টিএইচ