খাল-বিল জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় উপজেলার পাট চাষীরা পাট জাগ (পঁচানো) নিয়ে বিপাকে পড়েছে। প্রতিবছর বর্ষা ঋতুতে পানিতে খাল-বিল নিচু জমিগুলোতে পানির দেখা মিললেও এ বছর সেই দৃশ্য চোখে পড়ছে না।
যমুনা এবং হুড়াসাগর নদীবেষ্টিত পাবনার বেড়া উপজেলায় নদ-নদীতে সামান্য পানির প্রবাহ থাকলেও বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধের পশ্চিম দিকের খাল- বিল জলাশয়গুলোতে একেবারেই পানিশূন্য। পাট জাগ দিয়ে আঁশ বের করতে যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন তা পাচ্ছে না কৃষকরা। যার ফলে চলতি মৌসুমে পাট জাগ দেয়া ( পচাঁনো) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার অধিকাংশ পাট চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক কৃষক মেশিনের সাহায্যে সামান্য খানা, খন্দে পানি সরবরাহ করে সেখানে পাট জাগ দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার আশেপাশের নদী তীরবর্তী এলাকায় ছোট ছোট যানবাহনে করে পাট নিয়ে যাচ্ছে জাগ দেয়ার জন্য। এতে শ্রম এবং ব্যয় দুটোই বাড়ছে বলে জানান পাট চাষিরা।
উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক নাজমুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলনে যে হাসি ফুটেছিল কৃষকের মুখে, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পেরে সেই হাসি মলিন হয়ে গেছে।
এ বছর সাত বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি ইতোমধ্যে দুই বিঘা কেটে কোনো রকমে হাঁটু পানিতে জাগ দিয়েছি। জাগ দেয়ার অভাবে বাকি পাট কাটছি না। হাঁটুরিয়া গ্রামের কৃষক হাজী আরদোশ ফকির জানান, চলতি মৌসুমে পাটের ভালো দাম পাওয়া যেতো।
কিন্তু পানির অভাবে সময় মতো পাট জাগ দিয়ে না ওঠাতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে না। তিন বিঘা জমির পাট কেটে পানির অভাবে জমিতেই স্তুপ করে রেখেছি। সময় মতো বৃষ্টির দেখা না পেলে ক্ষেতের পাটক্ষেতেই শুকিয়ে যাবে। তখন সেগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত কবির জানান, চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ২শ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪শ হেক্টর।
গতবছর পানির অভাবে কিছু কৃষক ঠিকমতো পাট জাগ দিতে পারেনি, তবে এ বছর যাতে করে তারা সেই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারে সেজন্য ইতোমধ্যে পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পাধীন কৈটোলা পাম্পিং স্টেশনের পাঁচটি গেট খুলে দেয়া হয়েছে, যাতে প্রকল্পের অভ্যন্তরের নিচু জমি ও খাল-ডোবা জলাধারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমান পানি থাকে। এতে কৃষকদের পাট জাগ দিতে সুবিধা হবে বলে তিনি মনে করেন।
টিএইচ