শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Post

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিএনপি নেতার নেয়া চাঁদা ফেরত দিল পুলিশ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিএনপি নেতার নেয়া চাঁদা ফেরত দিল পুলিশ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ঈদ উপলক্ষে পুলিশকে ছাগল কিনে দেয়ার কথা বলে ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালাম মোল্যা, ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার মেম্বার ও বাজার বণিক সমিতির সভাপতি লক্ষণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত কালিনগর বাজারের সভাপতি লক্ষণ মণ্ডল, রূপাপাত ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালাম মোল্যা ও ৯নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সানোয়ার মেম্বার ডহরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে ঈদে ছাগল কিনে দেয়ার কথা বলে বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা তোলেন।

ওই চাঁদার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা স্থানীয় এক মেম্বারের কাছে তারা দেন পুলিশ ফাঁড়িতে দেয়ার জন্য। ওই মেম্বার ফাঁড়ির ইনচার্জকে টাকা দেয়ার বিষয়টি জানালে ফাঁড়ির ইনচার্জ মাইকেল মধুসুদন পান্ডে টাকা নেবে না বলে জানায়। পরে ওই মেম্বার ওই টাকা বাজারের সভাপতি লক্ষণ মণ্ডলের কাছে ঈদের দিন ফিরিয়ে দেয়।

বাজারের ব্যবসায়ী সুজিত পাল, উত্তম দত্ত, কৃষ্ণ মালো বলেন, ডহরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে ছাগল কিনে দেবে বলে কালাম মোল্যা, সানোয়ার মেম্বার, লক্ষণ মণ্ডল আমাদেরসহ অন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৩শ, ৫শ করে টাকা উঠিয়ে নিয়েছে।

রূপাপাত ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সহসাধারণ সম্পাদক রুপাপাত বাজারের পুরাতন পাট ব্যবসায়ী মো. মিলু মোল্যা শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বলেন, বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালাম মোল্যা, ওয়ার্ড আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সানোয়ার মেম্বর, বিএনপি নেতা ফরিদ হোসেন, বাজারের সভাপতি লক্ষণ মিলে ফাঁড়ির পুলিশকে খাশি কিনে দেয়ার কথা বলে চাঁদা তুলেছে। যতদুর জানতে পেরেছি পুলিশ সে টাকা ফেরত দিয়েছে। চাঁদা তোলার বিষয়টি বিএনপির লোকজনের মধ্যে খুব আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এই এলাকায় দলের অনেক বদনাম হচ্ছে।

কালাম মোল্যা, সানোয়ার মেম্বর ও লক্ষণ মণ্ডল বলেন, ঈদ আসলে প্রতিবছর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ফাঁড়িতে ছাগল কেনার জন্য দেয়া হয়। তাই এ বছরও টাকা তুলে ১০ হাজার টাকা খাশি কেনার জন্য দেয়া হয়েছে। একটি মহল টাকা তোলার বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা করছে। পরে ৩১ মার্চ বিকেলে সব ব্যবসায়ীর টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। ফরিদ হোসেনকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হলো না।

ডহরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মধুসুদন পান্ডে বলেন, আমাদের ফাঁড়িতে কেউ কোন টাকা দেয়নি। আর আমরা কেনো খাশি কেনার জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নিবো। তিনি আরও বলেন, পুলিশ ফাঁড়ির কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কালাম মোল্যা, সানোয়ার মেম্বর ও লক্ষণ মণ্ডল টাকা তুলেছে শুনেছি।

কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া কালাম মোল্যার নামে মামলা রয়েছে তাকে পুলিশ খুজছে গ্রেপ্তারের জন্য।

থানার ওসি মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পুলিশের কথা বলে টাকা তোলার বিষয়টি শুনে ফাঁড়ির ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে সে জানায় কিছু লোক ফাঁড়ির কথা বলে টাকা উঠিয়েছে শুনেছি। ওসি বলেন ব্যবসায়ীরা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টিএইচ