১৮ বছরের টগবগে তরুণ মোহাম্মদ নাজিম আহমেদ। সদ্য কলেজে ভর্তি হয়ে পরিবারের হাল ধরার জন্য টঙ্গীতে গিয়েছিল মায়ের কাছে। গত ৫ আগস্ট দুপুরের খাবার খেয়ে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুথানে যোগ দিতে বের হয় নাজিম। টঙ্গীতে পুলিশের গুলিতে মারা যায় সে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে নাজিমের জানাজার নামাজ নেত্রকোনার বারহাট্টায় নিজ গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখানেই দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতের খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বারহাট্টা উপজেলার ভাটগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামে নাজিমদের বাড়িতে গেলে তার মা শিমুলা আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, সরকার তিনদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিল। তাই আমার ছেলে সকাল থেকে ঘুমাচ্ছিল বাসায়। দুপুরে আমার হাজার নিষেধের পরও বাইরে থেকে একটু পরেই আসছি বলে আমার হুত আর আইল না। বিকালে ফোন বন্ধ পেয়ে খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারি আমার হুত পুলিশের গুলিতে মারা গেছে।
মরদেহ উত্তরা আজমপুর হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যা সাতটায় আমরা বাসায় নিয়ে আসি। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন এই মা। এই সময় তিনি তার ছেলের খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন।
নাজিমের বাবা রুস্তম আলী জানান, আশায় ছিলাম বুড়া বয়সে নজিমের আয় দিয়েই আমাদের পরিবার চলবে। কিন্তু তার মৃত্যুতে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। এই মৃত্যুর বিচার চাই। আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। বাবার ঘাড়ে সন্তানের মরদেহ কতটা ভারী, কতটা বেদনার, সেটা শুধু একজন সন্তান হারা বাবাই জানে।
প্রতিবেশী সালমান বলেন, নাজিম ছেলেটার মধ্যে খুবই আদব ছিল। অমায়িক ছেলে ছিল। আল্লাহ তাকে বেহেশত দান করুক। দরিদ্র পরিবার একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় হয়ে গেছে। আমরাও এই হত্যার কঠিন বিচার চাই। সে সঙ্গে আমাদের প্রশ্ন সরকার তো আগেই পতন হয়েছিল তাহলে তিনটায় কেন আমাদের নাজিমকে হত্যা করা হল।
টিএইচ