সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মতিনের (ভাষা মতিন) নিজ জন্মভূমি সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দুর্গম শৈলজানা চরে অবশেষে নির্মাণ হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার।
একুশে ফেব্রুয়ারিতে এখন আর বাঁশ ও কলাগাছের মিনারে দিতে হবে না শ্রদ্ধাঞ্জলি। কয়েক সপ্তাহ আগেই শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ চলছে। তবে ভাষা মতিনের স্মৃতি রক্ষার্থে উপজেলা সদরে একটি পাঠাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
জানা যায়, ‘৫২-র বাংলা ভাষা আন্দোলনের আহ্বায়ক প্রয়াত ভাষা মতিনের (ছাত্র মতিন) জন্মস্থান চৌহালী-এনায়েতপুরের জনপদ। তার জন্মভূমি চৌহালীর শৈলজানা চরের চাঁন্দইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ২০১০ সালের দিকে বেসরকারি এনজিওর অর্থায়নে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। সেসময় শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেছিলেন ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন নিজেই। সেখানেই প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে নানা আয়োজনে শ্রদ্ধা জানাতেন যমুনা চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
হঠাৎ ২০১৪ সালে যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় শহীদ মিনার ও বিদ্যালয় ভবন। সে বছরই বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করে অকাঠামো তৈরি করা হলেও শহীদ মিনারটি আর নির্মাণ না করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরপর প্রতি বছর স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁশ ও কলাগাছ দিয়ে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতেন সবাই। সেই সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় ২ বছর আগে জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে একই চরের শৈলজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ইট, সিমেন্টের একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। পরে যমুনার ভাঙ্গনে সেই শহীদ মিনার নদীতে চলে যায়।
এ বিষয়ে শৈলজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল আলিম জানান, এবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইট-সিমেন্টে গড়া স্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারব।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আ.লীগের সাবেক সভাপতি হজরত আলী মাস্টার বলেন, শহীদ মিনার নির্মিত হওয়ার মধ্য দিয়ে অনেক দিনের আশা পূরণ হবে। এখন অপেক্ষা ২১ ফেব্রুয়ারির।
এদিকে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, চারমাস হলো চৌহালীতে যোগদান করেছি, ভাষাসৈনিক আবদুল মতিনের সম্মানে চৌহালীতে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা আয়োজনে পালন ও স্মৃতি রক্ষার্থে একটি পাঠাগার স্থাপনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলকে অতিগুরুত্বের সঙ্গে অবগত করেছি এবং ভাষা মতিনের এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার।
টিএইচ