উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের তোড়ে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের তিনটি স্থান ভেঙে পড়েছে। বৃষ্টি থামলেও এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এ দিকে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্যাকবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী বলেন, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার জায়ফরনগর, পশ্চিম জুড়ী, সাগরনাল, পূর্ব জুড়ী ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। গত বুধবার রাতে পাহাড়ি ঢলে জায়ফরনগর ইউনিয়নের গৌরীপুর এলাকায় জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট জায়গা ভেঙে যায়। এ ছাড়া সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর ও বরইতলি গ্রামে বাঁধের আরও দুটি স্থানে ভেঙে পড়ে। জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের উত্তর ভবানীপুর এলাকা তিন-চার ফুট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। জুড়ী-বড়লেখা সড়কের বাছিরপুর এলাকায়ও একই অবস্থা। ঝুঁকি নিয়ে দুটি সড়কে বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করছে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা যায়, গৌরীপুরের ভাঙনকবলিত স্থান দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবেশ করছে। এতে গৌরীপুর, আঞ্জুরিকোনা, নামা মনতৈল ও ভবানীপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিকেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি, ভাইস চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কামরুল হাসান ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শনে যান।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ভাঙনের কথা জানানো হয়েছে। তিনি এসব স্থান পরিদর্শন করবেন। পানি কমে গেলে জরুরিভিত্তিতে এসব স্থান মেরামত করতে হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। এরপরও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো মানুষের বাড়িঘর, সড়ক থেকে পানি নামেনি। তিনি এলাকার প্রবাসী ও বিত্তবানদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ঊর্মি বিনতে সালাম দুপুরের দিকে জায়ফরনগর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে জুড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গত মানুষের মধ্যে শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনা আক্তার, ইউএনও লুসিকান্ত হাজং, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ হিসেবে ৬০ টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২১ জুন) থেকে চাল বিতরণ শুরু হয়।
টিএইচ