শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post
বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে

মহেশপুরে ৭ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

মহেশপুরে ৭ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফুলচাষিরা ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবসে ৭ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ উপজেলা বর্তমানে শস্যভান্ডার খ্যাত ফুলের ভান্ডারে পরিণত হয়েছে।

এলাকাবাসী ও মহেশপুর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর এ উপজেলায় ১০৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, কালার স্টিক ও গাঁদা ফুল উল্লেখযোগ্য।

এক সময় ধান ও গম ছাড়া তেমন কোনো ফসল উৎপাদন হতো না। তখন উৎপাদনের ৭০ ভাগ শস্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হতো। বর্তমানে কলা, বিভিন্ন জাতের সবজি, পেয়ারা, পেঁয়াজ-রসুন, কমলা, মাল্টা লেবু ও কুল চাষ হচ্ছে। 

এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য হারে ফুলচাষ শুরু হয়েছে। এ উপজেলায় মোট জমির পরিমাণ ৪৯২১০ দশমিক ২০ হেক্টর, মোট ফসলি জমি রয়েছে ৪০৪৮০ হেক্টর। এরমধ্যে ফুল চাষ হয়েছে ১০৪ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল একশ হেক্টরের নিচে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, ফুলের চাহিদা ও দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। বর্তমানে জারবেরা ফুল ২৫-৩০ টাকা, গ্লাডিওলাস ১৫-২০ টাকা, গোলাপ ১৫-২০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৫-৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, একবিঘা জমিতে ৫০ হাজার থেকে একলাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। বর্তমানে মহেশপুরের ফুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হয়ে থাকে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল কেনার জন্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে মহেশপুর চাষিদের সাথে যোগাযোগ করেছেন পাইকারি ক্রেতারা।

গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩ কোটি টাকার ফুল রপ্তানি করা হয়। এছাড়া উপজেলার নেপার মোড়সহ বিভিন্ন বাজারে ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে জারবেরা, গোলাপ ও রজনীগন্ধার চাহিদা বেশি। গাঁদা ফুলের ঝোঁকা বা মালা তৈরি করে তা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। 

উপজেলার বড় ফুলচাষি শ্যামকুড় গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে করিম মেম্বর জানান, তিনি ৩ বিঘা জারবেরা, ১বিঘা গ্লাডিওলাস, ২বিঘা চন্দ্রমল্লিকা ও ২ বিঘা রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন। ৮বিঘা জমির ফুল চাষে তার ১২ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। এতে তার খরচ বাদে ৭ লাখ টাকার মত লাভ হয়েছে বলে তিনি জানান।  

একই গ্রামের মতলেব গাজীর ছেলে নিজাম গাজী জানান, তিনি ১ বিঘা কালার স্টিক, ১ বিঘা গোলাপ, ২ বিঘা জারবেরা ও ১ বিঘা রজনীগন্ধা ফুল চাষ করেছেন। এই চাষে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে জানান। যশোরের গদখালীর ফুল চাষি নুর মোহাম্মদ মহেশপুর উপজেলায় ফুল চাষ করছেন এবং উপজেলার ফুল চাষিদের নানাভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।  

ঝিনাইদহ জেলার অর্ধেকের বেশি পরিমাণ ফুল চাষ হয়েছে এ উপজেলায়। এবার দাম বেশি পেলে আগামী বছর আরো ফুলচাষ বাড়বে বলে মহেশপুর কৃষি অফিস জানিয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে প্রায় সব জায়গায়তে ফুল চাষ রয়েছে।

টিএইচ