মাদারীপুরে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূ কেয়া মনি লিয়াকে হত্যার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১ মাস পরে রোববার (২৮ মে) লিয়ার লাশ কবর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হয়। ঘটনার পরে নিহতের বাবা থানায় হত্যামামলা করতে চাইলে রিপোর্ট পাওয়ার আগে মামলা নিতে অসম্মতি জানায় থানা পুলিশ।
পরে নিহতের বাবা বাদি হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যামামলা করেন। মামলার পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনঃরায় ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন মামলার বাদি (নিহতের বাবা)।
সে আবেদনের ভিত্তিতে কোর্টের আদেশে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফুয়াদ হাসান লাশ উত্তোলন করে পুনঃরায় ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন। নিহতের পরিবারের দাবি হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় সঠিক তদন্ত রিপোর্ট করা হয়নি। তবে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে সঠিক রিপোর্টসহ ন্যায় বিচার দাবি করেন তারা।
মামলা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর পৌর এলাকার ছোবাহান কবিরাজের মেয়ে লিয়া মনি ওরফে লিয়ার উপজেলার দুধ খালি ইউনিয়নের এওজ গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে মাসুদ সরদারের সাথে প্রায় দু’বছর আগে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্ন মানষিক ও শারিরীক নির্যাতন করে আসছে।
এনিয়ে কয়েক দফা পারিবারিক ভাবে মিটমাটও হয়। গত ৩০ মার্চ পুনরায় টাকার জন্য চাপ নিহতের স্বামী মাসুদ ও পরিবার। তবে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে মাসুদ ও তার পরিবার শুরু করে মারধর শারীরিক নির্যাতন। মারধরের এক পর্যায়ে নিহত লিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নিহতর বাবা ছোবাহান কবিরাজ অভিযোগ করে বলেন, আমি বুঝতে পারেনি এ-ই যৌতুকের টাকার জন্য আমার মেয়েকে জীবন দিতে হবে। মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন মিলে আমার মেয়েকে অত্যাচার করে মেরে ফেলেছ।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসনে চৌধুরী জানান, গৃহবধূর লিয়ার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত রিপোর্ট নিহতের পরিবারের মনমতো না হওয়ায় লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ফের তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
টিএইচ