মুন্সীগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়নের বিষয় নিয়ে তিন উপদেষ্টার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী দুই মাসের মধ্যে মুন্সীগঞ্জে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ, আগস্টে পুড়ে যাওয়া মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ভবন পুনর্নির্মাণ, কাটিখালি খালটি পুনঃখনন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সংস্কার, পুরান বাসস্ট্যান্ড থেকে ছনবাড়ি পর্যন্ত দুটি ব্রিজসহ ৪ লেনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও ভঙ্গুর গণসদন ভবনটি সংস্কৃতিক কর্মীদের ব্যবহার উপযোগী করে আগামীতে নির্মাণ করা হবে। দ্রুত সরকারি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ শুরু করা হবে। সোমবার (৭ এপ্রিল) মুন্সীগঞ্জ জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভা শেষে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্তরবর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) একথা বলেন।
উন্নয়নমূলক সম্মেলনে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জে জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. নিজাম উদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, এসবি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. গোলাম রসুল, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ মিয়াসহ দেশের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
সভায় জেলার চলমান ও পরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মুন্সীগঞ্জের রাস্তা সংক্রান্ত প্রকল্প ও কাটাখালী খাল উন্নয়ন প্রকল্প, মাওয়া ফেরিঘাট অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পসহ উন্নয়ন সংক্রান্ত অন্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এ সভার একটি বিশেষ অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানসমূহ নিয়ে প্রণীত ‘প্রত্নকথা’ নামক একটি তথ্যবহুল ও আকর্ষণীয় ভ্রমণ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জেলা প্রশাসন, মুন্সীগঞ্জের উদ্যোগে প্রণীত এই বইটিতে জেলার ৬টি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানসমূহের পরিচিতি, ইতিহাস, অবস্থান, ছবিসহ বিস্তারিত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন সভায় উপস্থিত মাননীয় উপদেষ্টারা। সম্মেলন শেষে তিন উপদেষ্টা সবাই আগস্টে শহীদদের কবর জেয়ারত করেন।
এছাড়াও, জুলাই ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য ‘২৪ বিপ্লবের সূতিকাগার’ বিষয়ক একটি বুকলিটও প্রকাশিত হয়। ওই বুকলিটে সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মুন্সীগঞ্জসহ দেশব্যাপী সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহের চিত্রসম্বলিত ধারাবাহিক বর্ণনা এবং মুন্সীগঞ্জের শহিদগণের ছবি ও শাহাদাতবরণের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। এটি মুন্সীগঞ্জ জেলার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি সংক্ষিপ্ত সংকলন।
টিএইচ