সিরাজগঞ্জের চৌহালীর যমুনা নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। এ কারণে ক্ষীণ হয়ে এসেছে নদী। এছাড়া নদীর মধ্যে নতুন নতুন চর জেগে ওঠায় পণ্যবাহী নৌকা, জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শুষ্ক মৌসুমে যমুনায় নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় এখন প্রস্থ দুই কিলোমিটার। যা বর্ষায় থাকে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার। যমুনার বুক জুড়ে কৃষকরা এখন সরিষা, বোরো ধান, ভুট্টা খেসারি কালাই ও চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে যমুনা নদীতে নেমে আসে বালু। ফলে নদীর মধ্যে তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে প্রতিবছর। একারণে বর্ষায় যমুনার পানি ফুলে ফেঁপে উঠে পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দেয়।
অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নৌ-পরিবহনে দুর্ভোগ বেড়ে যায়। প্রতিবছর যমুনার তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে হারাতে বসেছে তার অতীত ঐতিহ্য।
একসময় দূরদূরান্ত থেকে নৌ-পথে সিরাজগঞ্জ, বেলকুচি, এনায়েতপুর ও চৌহালীতে ব্যবসায়ীরা আসতো বাণিজ্য করার জন্য। সেই দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না। সেই সাথে তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই সহজেই দু’কূল ছেপে বন্যা আসে। ভাঙে আবাদি জমি, ঘর-বাড়ি। নিঃস্ব হয় শত শত পরিবার।
তাছাড়া পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীতে মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করতো, তারা আজ অসহায়। নদীতে নেই আর আগের মত মাছ। জেলেরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।
যমুনা নদীতে এখন পানি কমে যাওয়ায় নতুন নতুন চর উঠার কারণে চৌহালী থেকে এনায়েতপুর নৌকা ঘাট হয়ে জেলা সদরে যাতায়াতে শ্যালো নৌকায় ১ ঘণ্টার বদলে এখন প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় বেশি লাগে।
জাহাজ চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও শ্যালো নৌকা চলছে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার ঘুরে। নৌপথ বন্ধের কারণে এক চর থেকে আরেক চর এখন নৌকার বদলে পায়ে হেঁটে পাড় হওয়া যায় বলে খাষকাউলিয়া ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্টার কাজী রুহুল আমিন জানান।
চৌহালী উপজেলার নৌকা ঘাটের ইজারাদার নুরুল ইসলাম জানান, যেভাবে নদীর পানি কমছে, তাতে নৌকা চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এখন ড্রেজিং করে নৌ পথ তৈরি করা না হলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে জেলা সদরের সাথে নৌপথের চৌহালীর যাবতীয় কর্মকা্ল স্থরিব হয়ে পড়বে। দ্রুত ড্রেজিং করে নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে , নদীতে নতুন নতুন চর জেগে ওঠায় বর্ষার শুরুতেই পানি ফুলে ফেঁপে উঠে দু-পাড়ে নদী ভাঙন দেখা দেয়। আর শুষ্ক মৌসুমে নৌপথের পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান গুলোকে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। নৌকার মাঝিদের সাথে কথা হয়েছে এই যমুনা নদীতে ড্রেজিং করে নদী ভাঙনরোধ ও নাব্যতা সংকট সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
টিএইচ