শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

যমুনায় মাছ না পাওয়ায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন জেলেরা

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 

যমুনায় মাছ না পাওয়ায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন জেলেরা

নাব্যতা সংকট, নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও নদীর মাঝখানে ছোট বড় অসংখ্য চর জেগে উঠায় চাহিদা অনুযায়ী মাছ পাচ্ছেন না টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা পাড়ের জেলেরা। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবার চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে জেলে পরিবারগুলো। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। অনেকেই আবার বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে বেছে নিচ্ছেন ভিন্ন পেশা। 

এছাড়াও গত কয়েক বছরে শতাধিক জেলে পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ঘরবাড়ি হাড়িয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব পরিবারের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় সরকারি বা অন্যের জমিতে ঘর তুলে জরাজীর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে।

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় নিবন্ধনকৃত জেলের সংখ্যা ২ হাজার ১৬৩ জন। তবে বাস্তব পরিসংখ্যানে এর সংখ্যা অনেক বেশি। অধিকাংশ জেলের নির্ভর করতে হয় যমুনা নদীর উপর। সেখান থেকে মাছ আহরণ করে হাট-বাজারে বিক্রির মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তবে বর্তমান সময়ে যমুনায় আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন এসব জেলে পরিবার। 

সরজমিনে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে জেলেরা যমুনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত মাছ না পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। নদীতে মিলছে না চাহিদা অনুযায়ী মাছ। মাছ না পেয়ে তারা বেছে নিচ্ছেন ভিন্ন পেশা। তবে এখনো অনেকে ধরে রেখেছেন বাপ-দাদার ঐতিহ্য। 

গাবসারা চরাঞ্চলের জেলে সুকুমার চন্দ্র বলেন, বাপ-দাদার কাছ থেকে শেখা এই পেশা এখন আর ধরে রাখতে পারিনি। নদীতে পানি কম থাকায় আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। ফলে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া তো দূরে থাক সংসার চালানোই কষ্টকর। তাই বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিতে হয়েছে। 

নিপিন মাঝি বলেন, পৈতৃক পেশা মনে হয় আর বেশিদিন ধরে রাখতে পারবো না। আগে প্রতিদিন মাছ ধরে বিক্রি করে পেতাম ২-৩ হাজার টাকা, এখন সেখানে পাচ্ছি ৫-৬শ টাকা। এভাবে আর চলতে পারছি না। ছেলে মেয়ে নিয়ে পরিবার চালানো অনেক কষ্ট হচ্ছে।

ভূঞাপুর উপজেলা জেলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয় হাওলাদার জানান, নদীতে পানি প্রবাহ ও নদীর গভীরতা কম। এতে নদীতে আগে মতো মাছ পাওয়া যায় না। অসংখ্য জেলে তাদের পেশা বাদ দিয়ে এখন ভিন্ন পেশায় চলে গেছে। ফলে দিন যতই যাচ্ছে পেশাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি আমরা। 

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, সরকারিভাবে কোন প্রকল্প বা অনুদান নেই তাদের কাছে। কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা আসলে অবশ্যই জেলেরা পাবে। শুকনো মৌসুমে যমুনার মাছ কম থাকলেও বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যায়। 

টিএইচ