যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নব নির্মিত ১০ বেডের আইসিইউ ও ২০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী স্থাপন করা হলেও জনবল সংকটের কারণে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জনবল চেয়ে প্রকল্প পরিচালকের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। জনবল সংকট কেটে গেলে আইসিইউর পূর্ণাঙ্গ সুবিধা দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতাল সূত্র মতে, এপ্রিল মাসের তিন তারিখে নবনির্মিত আইসিইউ ওয়ার্ডের জন্য জনবল চেয়ে প্রকল্প পরিচালকের কাছে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বাক্ষরিত একটি পত্র পাঠানো হয়েছে। ওই পত্রে আইসিইউ চালুর জন্য ১০ জন চিকিৎসক, ২০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স দরকার বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও ওয়ার্ড বয়, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী আটজন এবং চারজন গার্ড চাওয়া হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে করোনারি কেয়ার ইউনিটের চতুর্থ তলায় আইসিইউ ও আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করে গণপূর্ত বিভাগ। সেই সঙ্গে সব যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী স্থাপন করা হয়।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ ওয়ার্ডে থাকবে ১০টি আইসিইউ বেড, ২০টি আইসোলেশন বেড, চিকিৎসক ও নার্সদের বসার কক্ষ, অক্সিজেন, নেবুলাইজার এবং ভেন্টিলেটরসহ বিভিন্ন উপকরণ। সম্পূর্ণ ওয়ার্ড শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের জন্য লাগানো হয়েছে ২০টি এসি। লিফট সুবিধাও থাকবে।
এ ব্যাপারে যশোর মেডিকেল কলেজের এনেসথেসিয়া ও আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এএইচএম আহসান হাবিব বলেন, আর্টিফিসিয়াল শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর জন্য ভেনটিলেটর মেশিন, অটোমেটিক শিরিঞ্জ পাম্প মেশিন, কার্ডিয়াক মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। এখানে পালস, প্রেসার, অক্সিজেন সেচুরেশন এবং ইসিজি করা যাবে। ৬০ থেকে ৮০ লিটার পার মিনিটে অক্সিজেন সাপ্লাই দেয়ার জন্য হাইফ্লোনেজাল ক্যানোলা স্থাপন, শ্বাসনালী পরিষ্কার করার জন্য সাকার মেশিন, শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখার জন্য বিপেপ এবং সিপেপ, হঠাৎ বন্ধ হওয়া হার্টকে শক দিয়ে সচল করার জন্য ডিফিব্রিলেটর স্থাপন এবং প্রতিটি বেডের বিপরীতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন, একটি ইয়ার ও একটি ভ্যাকিউম লাইন সংযোগ দেয়া আছে।
ফলে এখন থেকে আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন এমন রোগীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর বাইরের কোন হাসপাতালে যেতে হবে না। ১০ বেডের কোভিড ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) প্রস্তুত করার জন্য সরকারের বরাদ্দের পাশাপাশি স্থানীয় সহায়তায় প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র এবিজি ম্যাশিনের রিএজেন্ট ঘাটতি রয়েছে বর্তমানে।
এদিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, যে আইসিইউ আছে সেটা একেবারে জাতীয়মানের। এখানে শুধুমাত্র হাইফ্লো অক্সিজেন নয় উন্নত মানের ন্যাজাল ক্যানোলা ও আধুনিক মেশিনসহ জরুরি প্রয়োজনে সব সেবা দেয়া সম্ভব। তবে রয়েছে জনবল ঘাটতি, বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন সাতজন। এরমধ্যে দুজন কোভিট প্রজেক্টের, সিনিয়র স্টাফ নার্স রয়েছেন ১৬ জন। এরমধ্যে তিনজন কোভিট প্রজেক্টের নিয়োগ প্রাপ্ত। এছাড়াও ওয়ার্ড বয়, আয়া, গার্ড ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছে ১৩ জন।
এরমধ্যে তিনজন কোভিট প্রজেক্টের নিয়োগ প্রাপ্ত, বাকিদের হাসপাতালের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে বেতন দেয়া হয়। আইসিইউ ওয়ার্ডের জনবল পেলে সেবার মান আরোও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদী। এছাড়াও তিনি বলেন, জনবল চলে আসলে ও নবনির্মিত আইসিইউ ওয়ার্ডটি চালু হলে দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সেরা আইসিইউ ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হবে এটি। তখন এ জেলার পাশাপাশি আশেপাশের জেলা থেকে রেফার হয়ে আসা রোগীদের আইসিইউ সেবা নিতে আর খুলনা বা ঢাকায় দৌড়াতে হবে না।
টিএইচ