বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

যশোরে বৃষ্টিতে ভেসে গেল ১৪০ হেক্টর জমির সবজি

যশোর প্রতিনিধি

যশোরে বৃষ্টিতে ভেসে গেল ১৪০ হেক্টর জমির সবজি

উত্তাল বঙ্গোপসাগর, থেমে থেমে হচ্ছে ভারী বৃষ্টি, সেইসঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। এ অবস্থায় চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যেই গত শনিবার বিকেল থেকে রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত যশোরে ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। 

এতে যশোর পৌর শহরের কয়েকটি নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয় ও জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ১৪০ হেক্টর জমির আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত।

যশোর কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণে জেলার ১৪০ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ক্ষেতে কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি, টমেটো, পাতাকপি, ফুলকপি, পালংশাক চাষাবাদ করেছিলেন।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত শতকরা ২৫ ভাগ কৃষি জমি ভারি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) সারাদিন এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। সারাদেশে মোট সবজি চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ সবজি এ জেলা থেকে সরবরাহ করেন কৃষকেরা। 

এদিকে রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) সকাল থেকে শহর ঘুরে দেখা গেছে, ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে যশোর পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৩০টি সড়ক। এর মধ্যে শংকরপুর, বেজপাড়া, খড়কি, কারবালা, স্টেডিয়ামপাড়ার অনেক বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার ড্রেন ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি সড়ক পার হয়ে ঘরের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে এসকল এলাকার মানুষেরা।

যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত শনিবার ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এবং রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই যশোরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কখনো ভারী, কখনো হালকা এই বৃষ্টিপাত শনিবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত যশোরে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
 
বৃষ্টিতে অসুবিধায় পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। যশোর জিলা স্কুলের এক শিক্ষার্থী নয়ন হোসেন বলে, বৃষ্টিতে স্কুলে যেতে পারিনি। ছাতাতেও মানাচ্ছে না। বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তায় হাটু সমান পানি। স্কুল ড্রেস ভিজে যাচ্ছে, বই খাতাও ভিজে যাওয়ার মতো অবস্থা।

খড়কি এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি জমেছে। সড়কের পাশে ড্রেন থাকলেও আবর্জনায় পূর্ণ হওয়ায় পানি উপচে সড়কে প্রবেশ করেছে। সড়কের সেই পানি আবার দোকানে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, সড়ক নিচু আর ড্রেন হয়ে গেছে উঁচু। তাই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শংকরপুর এলাকার সালেহা বেগম বলেন, ‘বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি। পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছি।

টিএইচ