দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া-নাজিরগগঞ্জ রুটের নৌ চ্যানেল প্রশস্তকরণকল্পে পদ্মার ধাওয়াপাড়া পয়েন্টে ভরাট বালু (খননকৃত বর্জ্য) বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মোবাইল কোর্টের অভিযানে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে রাজবাড়ী সদর ইউএনও মারিয়া হক।
রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিএর সহকারী প্রকৌশলী মো. এখলাছ উদ্দিন বলেন, নৌপথে রাজবাড়ী ও পাবনার মধ্যকার যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে গতবছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট এলাকায় ড্রেজিং কাজ শুরু করা হয়। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে এ কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২টি ড্রেজার।
তিনি আরও বলেন, ধাওয়াপাড়া ফেরি ঘাট এলাকায় ৩ ধাপে পলি অপসারণের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ২ ধাপে খনন কাজ শেষ হয়েছে। এ খনন কাজের মাধ্যমে ২০ লাখ ঘনফুট পলি অপসারণ করা হয়েছে। এগুলো ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাটের অদূরে মহিন এন্টারপ্রাইজের তত্ত্বাবধানে বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠের এলাকাজুড়ে ঘিরে রাখা একটি বেডে রাখা হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ব্যবসায়ী ফজলু বাঙ্গাল ওরফে ফজলুল হকের তত্ত্বাবধানে থাকা কয়েক একর খাসজমি নিয়ে গড়ে ওঠা বিশাল আকৃতির বেডে এসব পলি রাখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফজলুল হক বলেন, স্থানীয়ভাবে এগুলো দেখভালের জন্য মাহিন এন্টারপ্রাইজকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাহিন এন্টারপ্রাইজ খননকৃত পলি স্থানীয়ভাবে বিক্রি ও খাস জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। যদিও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালেক শিকদার অভিযোগ মানতে নারাজ।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ১১ ডিসেম্বর রাজবাড়ী জেলার ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে নিজ খরচে ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল পরিবহনের নিমিত্তে মাহিন এন্টারপ্রাইজকে নিয়োগ দেয়া হয়। এতে সংরক্ষিত ডাইক ব্যতীত অন্য কোন স্থান হতে ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল (বালি/মাটি) উত্তোলন/অপসারণ না করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়।
রাজবাড়ী কালেকটরেটের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. পলাশ উদ্দিন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে শুধু সরকারি/ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে খননকৃত বালি/মাটি বিনামূলে সরবরাহ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এগুলো বিক্রি বা নিজ জমি ভরাটের কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই।
রাজবাড়ী সদর ইউএনও মারিয়া হক বলেন, বিনামূল্যের বালু বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক শিকদারকে বালি মহাল ব্যবস্থাপনা আইনে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
টিএইচ