শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

রাজবাড়ীতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

রাজবাড়ী জেলা পুলিশের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ পুলিশ গঠনের দাবিতে ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল ও ইন্সপেক্টর জেনারেল বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স’র নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

শুক্রবার জুম্মাবাদ রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্সে কর্মরতরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ, পিপিএমের মাধ্যমে ইন্সপেক্টর জেনারেল বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স’র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।

এসময় রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ,পিপিএম সকল পুলিশ সদস্যদের শান্ত থাকাসহ কর্মস্থলে যোগদানের অনুরোধ জানান।

পুলিশ সদস্যদের দাবিগুলো হলো, স্বাধীন কমিশন গঠন, পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করে দলীয় প্রভাব মুক্ত জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হবে। আমরা যে রঙের ইউনিফর্ম পরিধান করে কলঙ্কিত হলাম সেই পোশাকে রং পরিবর্তন করে কনস্টেবল হতে আইজি মহোদয় পর্যন্ত একই ড্রেস কোড করতে হবে। আমাদের সকল পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং এর সাথে সাথে যে সকল সিনিয়র অফিসাররা ক্ষমতার লোভী দালাল পুলিশ অফিসারদের কারণে আমাদের শত শত পুলিশ সদস্য ও সাধারণ জনতা মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে গ্রেফতার করে অনিতিবিলম্বে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে বিচার করতে হবে ও তাদের অবৈধ সমন্ত্র সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। 

চলমান সহিংসতার যে সকল পুলিশ সদস্য আহত ও নিহত হয়েছে তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যে সকল পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জান-মালের নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকারের বিভাগীয় ব্যবস্থা অথবা হয়রানি করা যাবে না। 

সকল পুলিশ সদস্যদের অন্যান্য সংস্থার চাকুরির মত শ্রম আইন অনুযায়ী ০৮ (আট) ঘণ্টা কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যদি ৮ (আট) ঘণ্টার বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে ওভারটাইম হিসেবে গণ্য করতে হবে। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যদের প্রতিবছর ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটির পাশাপাশি ২ মাস অর্জিত ছুটি ভোগের ব্যবস্থা করতে হবে। 

প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের নিজ জেলা ব্যতীত পর্যায়ক্রমে পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে এবং অধস্তন পুলিশ সদস্যদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সকল পুলিশ সদস্য ও পরিবারের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং তার পাশাপাশি ব্যক্তিগত চিকিৎসা করা হলে তাহার ভাউচার অনুসারে কল্যাণ তহবিল থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার ক্ষেত্রে একবার পরীক্ষায় পাশ করার পরে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা এবং অধস্তনদের পদোন্নতি বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনে সুপারনিউমারি পদ সৃজন করতে হবে। 

ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিগত ১৫ বছরে যারা সুবিধা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের দায়িত্ব দিতে হবে এবং ওসি হিসেবে ২ বারের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং ৫৪ বছরের বয়সের সীমাবদ্ধতা তুলে দিতে হবে। অধস্তন পুলিশ সদস্যদের সাথে পিআরভি অনুসারে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করতে হবে এবং ব্যক্তিগত কাজে কোন পুলিশ সদস্যকে ব্যবহার করা যাবে না ও কনস্টেবল থেকে সকল পর্যায়ের অফিসারদের পোস্টিং বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। 

সার্জেন্ট এবং সাব-ইন্সপেক্টরদেরকে পিএসসির অধীনে একই নিয়োগের মাধ্যমে সকল ইউনিটে পদায়ন করতে হবে এবং বর্তমানে কর্মরত সার্জেন্টদেরকে তদন্ত ক্ষমতা দিতে হবে ও এটিএসআই কে এএসআই (নিঃ) হিসেবে সমন্বয় করতে হবে। জনগণের স্বার্থে এবং ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্র্যাফিক বিভাগের অবৈধ বেকার বাণিজ্য বন্ধ করা এবং মামলার টার্গেট প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। 

কমিউনিটি ব্যাংক এবং সকল কল্যাণ তহবিলের সুস্পষ্ট হিসাব প্রতিবছর সকলকে প্রদান করতে হবে এবং লোনের ক্ষেত্রে সুদের ১০% এর নিচে নিয়ে আসতে হবে। নবম গ্রেড থেকে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে ষষ্ঠ গ্রেড নিশ্চিত করতে হবে এবং একই পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের মধ্যে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। 

ইন্সপেক্টর থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাকরি হারালে সকলে পেনশনসহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পায় কিন্তু কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত এই সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং যে সকল সদস্যদের বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে তাদেরকে মানবিক কারণে বিবেচনা করতে হবে। ইন্সপেক্টর থেকে ৬০% এএসপি পদে পদোন্নতি দিতে হবে। 

পদোন্নতির জটিলতা নিরসনের জন্য যে-সকল পদে পদোন্নতির জন্য সুপার নিউমারি চালু করতে হবে এবং ন্যূনতম পুলিশ সুপার পর্যন্ত পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অধস্তন পুলিশ সদস্যদের টিএ/ডিএ বিল যথাসময়ে প্রদান করতে হবে ও সোর্স মানি প্রদান করতে হবে। 

পুলিশের সকল সদস্য সকল ইউনিটে চাকুরি করার সুযোগ রাখতে হবে (স্বায়ত্বশাসিত এবং টেকনিক্যাল) বলে কোন ইউনিট থাকবে না ও সবাইকে সব ইউনিটে বদলির সুযোগ থাকতে হবে। পুলিশ সুপারের নিচে বডিগার্ড অর্ডারলি নিয়ম বন্ধ করতে হবে।

দাবিসমূহ ৭ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় সমগ্র বাংলাদেশ পুলিশের কর্মবিরতি চলমান থাকবে।

টিএইচ