লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা বিলের ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে কৃষি ও ফসলি জমির মাটি। মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির ফলে উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের এক বিলেই তৈরি হয়েছে দুই শতাধীক পুকুর।
গত কয়েকদিন ধরেই এইভাবে ফসলি জমির মাটি কেঁটে নেয়ার কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে গত দুদিন স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার পর গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম ও রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমানসহ পুলিশ সদস্যরা।
এ সময় সরকারি দফতরের কর্মকর্তাদের আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মাটি ব্যবসায়ীদের শ্রমিকের দল। গা-ঢাকা দেয় মাটি ব্যবসায়ীরাসহ মদিনা ইটভাটা মালিক আমির হোসেন ডিপজল ও জেবিএম ইটভাটা মালিক জাহাঙ্গীর কোম্পানি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যান। চারদিকে শুধু পুকুর আর পুকুর। কোথাও চাষাবাদের জমি নেই। ইউএনও এবং পুলিশ আসার কথা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। এসময় কর্মকর্তারা কথা বলেন ভুক্তভোগি ও ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের সঙ্গে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভোলাকোট ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিলুকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে ওই বিলের মাটি কাটা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া ও চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তদারকি এবং মাটি ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করার জন্য বলেন।
কৃষক মো. শাহ আলম ও রাজা মিয়া বলেন, জমির মাটি রক্ষায় কত আন্দোলন করেছি-সংগ্রাম করেছি। কেউ ফিরেও দেখেনি। আজ আমাদের ফরিয়াদ শুনেছেন সৃষ্টিকর্তা। তার দয়ায় ইউএনও ও ওসি স্যারের কারণে মাটি লুট বন্ধ হয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি দাবি করেন মাটি লুটকারীরা খুবই খারাপ। কোনভাবেই যেন এরা এ মাঠে আর না নামতে পারে। কৃষকের ক্ষতি যেন করতে না পারে।
ভোলাকোট ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিলু জানান, সরকারি নির্দেশনার বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে। আজও একটি বিলের মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, আমরা এ বিলে এসে মাটি কাটার সত্যতা পেয়েছি। জোর করে মাটি কাটা বা ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে যদি কেউ থানায় অভিযোগ করে তাহলে অবশ্যই বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন ইসলাম জানান, আমরা ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছি। কোনভাবেই এ বিল থেকে মাটি কাটা যেন না হয় সে লক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণে রিপোর্ট লেখা হবে।
টিএইচ