শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

রামপালে রেমাল পরবর্তী সময় থেকে একটি গ্রামসহ ৩ হাজার একর মৎস্য ঘের পানির নিচে

রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

রামপালে রেমাল পরবর্তী সময় থেকে একটি গ্রামসহ ৩ হাজার একর মৎস্য ঘের পানির নিচে

যেদিকে চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। বাড়িতে পানি, কৃষি জমিতে পানি, মসজিদে পানি।  এক হাজার পরিবারের সুপেয় খাবার পানির সংকট। নারী, শিশু, বৃদ্ধরা পানিবন্দি। শুকনা জায়গার অভাব। স্যানিটেশন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। যাতায়াতের রাস্তাঘাট নেই। পুটিমারী নদীর উপর নির্মিত চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটিও জরাজীর্ণ। 

যেকোন সময় ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ওই সাঁকো পার হয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের যেতে হয় স্কুলে। কারো অসুখবিসুখ হলে বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধদের হাসপাতালে নেয়ার উপযোগী কোন পথও নেই। উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বর্ণি, গৌরম্ভা, শ্রীরম্ভা, মুড়লিয়া ও ছায়রাবাদের ৫টি মৌজার প্রায় আড়াই হাজার একর জমি পানির নিচে। দুই হাজার ঘের মালিকেরা কয়েক কোটি টাকার মূল্যের মৎস্যচাষ করেছিলেন ওসব জমিতে। কিন্তু সবই হারিয়ে এখন সবাই পথে বসেছেন। 

ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর থেকেই এমনটি ঘটেছে উপজেলার ১নং গৌরম্ভা ইউনিয়নের ছায়রাবাদ, বর্ণি, প্রসাদনগর, গৌরম্ভা, শ্রীরম্ভা ও কন্যাডুবি গ্রাম এবং এর আশপাশ এলাকায়।
এলাকাবাসী ভুক্তভোগী মো. হাসান মল্লিক, সাবেক মেম্বার গোলাম মোস্তফা হাওলাদার, আবুল হাসান ফকির, আবুল খায়ের, রিয়াজ ও আরফিন গাজী জানান, ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে গৌরম্ভার বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। 

সরকারি কোন সহযোগিতা ছাড়াই গ্রামবাসী বেড়িবাঁধ মেরামত করে গ্রাম ও মৎস্য ঘের রক্ষার চেষ্টা করেন। এভাবে প্রতি ১৫/২০ দিন অন্তর অন্তর বেড়িবাঁধ ভাঙে আর প্লাবিত হতে থাকে। কোন অবস্থায় বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি রোধ করা যাচ্ছে না। এতে সম্পুর্ণ হতাশ ও দিশেহারা হয়ে পড়েন তারা।

তারা আরও জানান, বিএস ঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সরকারি রাস্তাটি সম্পূর্ণভাবে বিলিন হয়ে গেছে। কোন সংস্কার করা হয় না।  স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তীব্র খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষ অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করছে। এতটা সমস্যা হলেও কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কোন কর্তাব্যক্তির কেউ দুর্গত এলাকায় যাননি। 

গৌরম্ভার বিএনপি নেতা মাস্টার মুজিবর রহমান জোয়ার্দার জানান, আপনারা সরোজমিনে গিয়ে দেখেছেন, আমরা কেমন আছি। বিগত সরকারের সময় আমাদের ওপর বিমাতা সুলভ আচারণ করা হয়েছে। সরকারের কর্মকর্তারা নজর না দিলে আমাদের ডুবতে হবে আর ভাসতে হবে। কোন উপয় না হলে এলাকা ছাড়তে হবে।

এ বিষয়ে গৌরম্ভা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রাজিব সরদারের ফোনে যোগাযোগ করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

রামপাল ইউএনও রহিমা সুলতানা বুশরা সমস্যার কথা শুনে খুবই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি মঙ্গলবারেই কর্মকর্তা পাঠাবো। তারা সরোজমিনে গিয়ে দেখবেন। আমিও যাবো। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা।

টিএইচ