সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

রেলে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধে উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

রেলে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধে উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে

অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকায় দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা) উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকে। এতে করে রেলওয়ে খাতে অস্বাভাবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা।

 রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মিটার গেজ ও ব্রডগেজ লাইনের রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত হয়ে থাকে। এছাড়াও ১২ হাজার ধরণের যন্ত্রাংশ তৈরি হয় ওই কারখানায়। যা ব্যবহার হয় রেলওয়ে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) যাত্রীবাহী ক্যারেজ ও মালবাহী ওয়াগনে। কারখানাটি লোকবল কাঠামো হচ্ছে ২ হাজার ৮৫৯ জন। কিন্ত বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৭১৬ জন। 
 
 রেলওয়ে কারখানাটি ২৯টি শপে (উপ-কারখানা) রয়েছে ছোট-বড় ৭৪০টি মেশিন। প্রতিটি মেশিন পরিচালনায় গড়ে ৪ জন জনবল প্রয়োজন। কিন্তু কোন কোন মেশিন পরিচালনায় একজনও শ্রমিক নেই। ফলে অনেক মেশিন অলস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। 

অপরদিকে পার্বতীপুরের কেলোকায় লোকবল কাঠামো হচ্ছে ৫৫৯ জন। কিন্ত কর্মরত আছেন মাত্র ১৬৩ জন। ওই কারখানায় প্রতিমাসে দুইটি রেলের ইঞ্জিন মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত জুলাই মাসে তা একটিতে নেমে এসেছে। 

কেলোকার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) রফিকুল ইসলাম জানান, গত ১ জুলাই থেকে টেমম্পরারি লেবার রিক্রুটমেন্ট (টিএলআর) অর্থাৎ অস্থায়ী শ্রমিকদের বসিয়ে দেয়ার কারণে উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এ কারখানায় ৯৩ জন অস্থায়ী শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। যারা নিয়মিত ১৬৩ জন শ্রমিককে সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। এসব অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় ২০১৮ সালে। তখন থেকে প্রতিবছর তাদের নিয়োগ নবায়ন করা হতো। দীর্ঘদিন তারা রেলওয়ে কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকায় দক্ষ হয়ে উঠেছেন।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান জানান, রেলওয়ে কারখানায় বর্তমানে ৭১৬ জন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এনিয়ে কারখানার বিশাল কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। কারখানাটি ৬০০ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিলো। লোকবল না থাকলে অবশ্যই উৎপাদন ব্যাহত হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুত সংকটে কেটে যাবে।  

রেলের একটি সূত্র জানায়, অস্থায়ী শ্রমিক বসিয়ে দেয়ায় ওই শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা ইতোমধ্যে ট্রেন অবরোধের মতো শক্ত কর্মসূচি পালন করেছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন টিএলআর শ্রমিক বলেন, কাজ নেই মজুরি নেই এর ভিত্তিতে প্রতিদিন ৪৫০ টাকা মজুরিতে আমরা কাজ করেছি। ২০১৮ সাল থেকে আমরা রেলের উন্নয়নে শ্রম দিয়ে আসছি। অথচ আমাদের নিয়মিত না করে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে কর্তৃপক্ষ। 

টিএইচ