লক্ষ্মীপুরে নোমান-রাকিব হত্যা মামলার গ্রেপ্তারকৃত ৩নং আসামি স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা দেওয়ান ফয়সাল আদালতে খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল চন্দ্রগঞ্জ আদালতের বিচারক আনোয়ারুল কবীরের কাছে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় আদালতে জবানবন্দির বিষয়টি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ।
এসময় পুলিশ সুপার জানান, যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যা মামলায় র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে বিভিন্নস্থান থেকে এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে পুলিশের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মেয়াদে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এরই মধ্যে মামলার ৩নং আসামি দেওয়ান ফয়সাল স্বেচ্ছায় আদালতে জবানবন্দি দেন। কিভাবে কারা কেন এ খুনের সাথে সম্পৃক্ত তাদের তথ্য দেন আদালতে।
এসময় খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ৮জনের নাম প্রকাশ করেন। ঘটনার রাত ৮টায় জনৈক এক ব্যক্তির ফোন কলে ঘটনাস্থলে আসেন ফয়সাল। তার সঙ্গে নোমানের শুত্রুতা ছিল রামগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর ভোটে তার প্রতিপক্ষের পক্ষে অবস্থান নেয়া ও উপজেলা যুবলীগের কমিটিতে তাকে না রাখা। এর আগে বশিকপুরে নোমানের সঙ্গে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর ঝগড়া ও প্রতিশোধ হিসেবে মারধর করার কথা জানিয়ে ঘটনাস্থলে আনা হয় তাকে।
ঘটনাস্থলে এসে অন্য আরো ৭জন অস্ত্রধারীদের সঙ্গে যুক্ত হন ফয়সাল। পরে রাকিব ও নোমানের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে রাকিবকে সর্টগান দিয়ে গুলি করা হয়। এসময় নোমান দৌড়ে দোকানে ঢুকে পড়লে সেখান থেকে ধরে নিয়ে ৩ রাউন্ড গুলি করে ফেলে রাখে।
এরপর হেঁটে হেঁটে গিয়ে সিএনজিযোগে রামগঞ্জের দিকে চলে যান তারা এবং ঘটনার পরে জনৈক এক ব্যক্তির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে অংশ নেয় ফয়সাল।
মামলার তদন্ত ও অন্য অপরাধীদের ধরার স্বার্থে আর কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান পুলিশ সুপার।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউপির নাগেরহাট এলাকায় যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
পরে নিহত নোমানের বড়ভাই মাহফুজুর রহমান বাদি হয়ে এজাহার নামীয় ১৮জনসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এই মামলার ৩নং আসামি দেওয়ান ফয়সালকে গত রোববার রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
টিএইচ