রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

শেখ হাসিনা সেতু সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধস

রংপুর প্রতিনিধি

শেখ হাসিনা সেতু সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধস

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে শেখ হাসিনা সেতুর সংযোগ সড়কের কয়েকটি স্থানে ধসে গেছে। এতে রংপুর-লালমনিরহাট সংযোগ কাকিনা অভিমুখী সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন ও পথচারীরা। 

স্থানীয়দের দাবি, এক দিনের বৃষ্টি ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ধসে গেছে সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক। এর ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 

এ ব্যাপারে তারা নিম্নমানের কাজ ও তদারকির অভাবকেই দায়ী করছেন। এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর-লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থল মহিপুর ও কাকিনা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকে সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি সেতুটি সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। 

এরপর লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর, পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, তুষভাণ্ডার, কালীগঞ্জ, কাকিনা থেকে প্রতিদিন পাথর বোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে।
 
এসব ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে রংপুর-মহিপুর শেখ হাসিনা সড়ক অভিমুখী বিভিন্ন স্থানে ফাটলসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সড়কটির বিভিন্ন অংশ ধসে যায়। এ নিয়ে ২৫ মে রংপুর-গঙ্গাচড়া সড়ক দ্রুত সংস্কারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠান রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। 

এর ফলে গত ২৫ মে রাত থেকে আবারও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গত ২৯ মে পাটগ্রাম ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতি ট্রাক চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে। 

ফলে কালীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম শর্তসাপেক্ষে রাত ১০টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১০ চাকার ড্রাম গাড়ি ছাড়া সব যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয় ট্রাক মালিক সমিতিকে। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে তারা নির্বিঘ্নে চালাচ্ছে ১০ চাকার ড্রাম গাড়ি।

স্থানীয়রা জানান, প্রশাসন বড় বড় পাথরের গাড়িগুলা চলাচল বন্ধ করলে ভালো হলো। এই গাড়িগুলো চলাচল করায় দুর্ঘটনা ঘটছে। 

তামজিদ হোসেন, লাভলু মিয়া ও রবিউল ইসলামসহ বেশ কজন জানান, গত তিন মাসে ছোট-বড় প্রায় ১২ থেকে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা বলছেন, সড়কটি এবং সেতুর সংযোগস্থল যদি দ্রুত সংস্কার করা না হয়, তাহলে হয়তো প্রতিদিন এ ধরনের দুর্ঘটনা আরও বাড়তে থাকবে। 

এ ব্যাপারে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, কদিন আগে শুনলাম এই সড়কে নাকি ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে কিন্তু সন্ধ্যা হলে নির্বিঘ্নে ১০ চাকার ড্রাম গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল করছে। 

এর ফলে সড়কে ফাটলসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ধসে গেছে শেখ হাসিনা সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক। দ্রুত এই পরিস্থিতি উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহির ইমাম জানিয়েছেন, মোটর মালিক সমিতির লোকজনকে ১০ চাকার ড্রাম গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়নি। এরপরও যদি তারা ১০ চাকার গাড়ি চালায়, তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী জানিয়েছেন, গঙ্গাচড়ার শেখ হাসিনা সেতু সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে চেষ্টা চলছে। দ্রুতই সংস্কার কাজ করা হবে।

টিএইচ