রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

শ্রীমঙ্গলে টানা বৃষ্টিতে বিবর্ণ চা গাছ ফিরে পেয়েছে প্রাণ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

শ্রীমঙ্গলে টানা বৃষ্টিতে বিবর্ণ চা গাছ ফিরে পেয়েছে প্রাণ

চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহের পর টানা বৃষ্টিতে চা গাছ ফিরে পেয়েছে প্রাণ। বৃষ্টির পানি গায়ে লাগিয়ে দুটি পাতা একটি কুঁড়িতে ভরে উঠেছে চা গাছগুলো। কদিন আগের তীব্র তাপদাহের কারণে চা পাতাগুলো ঝলসে বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির ছোয়ায় যেন আবার প্রাণ ফিরে পেয়ে জেগে সবুজের এই সাম্রাজ্য।

বৃষ্টি চা বাগানের জন্য আশীর্বাদ হলেও অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টির মতোই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান চা উৎপাদন সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার হতে মঙ্গলবার (২০ জুন) পর্যন্ত ২৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ মাঝারি রয়েছে। 

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, অনাবৃষ্টি আর অত্যাধিক তাপমাত্রায় বিবর্ণ হয়ে যাওয়া চা গাছ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। চা বাগানগুলোর গাছে গাছে এসেছে নতুন কুঁড়ি, বৃষ্টিস্নাত চা পাতাগুলো ফিরে পেয়েছে তার সৌন্দর্য। তবে ঝড় বৃষ্টিতে অনেক গাছপালা ভেঙে পরেছে। চা শ্রমিকরা চা-পাতা তোলার পাশাপাশি ভেঙে পরা এসব গাছ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে।

ইস্পাহানি জেরিন চা বাগানের উপমহাব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, চা উৎপাদনে বৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিছুদিন আগেও আমরা চা বাগানে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেছি। বৃষ্টি না থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে পানি দিতে হয়েছে। 

তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে চা গাছগুলোতে নতুন কুঁড়ি বের হচ্ছিল না, বরং পাতাগুলো বিবর্ণ রঙ হয়ে গেছিল। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ প্রায় সব চা বাগানেই ছিল। এই বৃষ্টির ফলে চা গাছগুলো সজীবতা ফিরে এসেছে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি ঠিক আছে। তবে অধিক বৃষ্টিও চা বাগানের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এখন চা উৎপাদন ভালো হচ্ছে, তবে বিদ্যুতের কারণে কিছুটা শঙ্কিত চা শিল্প।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান, অতিবৃষ্টি চা গাছের জন্য ক্ষতিকর। চা গাছের গোড়ায় পানি জমলে তা চা গাছের জন্য ক্ষতিকর হবে। চা গাছের নিচে যেন পানি না জমে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

এদিকে প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চা শ্রমিকরাও পরেছেন বিপাকে। অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পরছে, বজ্রপাতে একজন চা শ্রমিক নিহত ও ৪/৫ জন আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চা শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ ও তাদের কর্মস্থলের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত। 

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও চা বাগান কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বজ্রপাতের সময় সতর্কতার বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন।

টিএইচ