বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Post

সন্দ্বীপে তরমুজ চাষে সম্ভাবনা থাকলেও সেচ সংকটে বাধা

সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

সন্দ্বীপে তরমুজ চাষে সম্ভাবনা থাকলেও সেচ সংকটে বাধা

সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া  ইউনিয়নের চর কাছিয়াপাড় গ্রামে বিস্তীর্ণ এলাকায় তরমুজ চাষের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। কৃষকরা গত তিন মাস আগে বীজ রোপণ করে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পরিচর্যায় পাশাপাশি সার, পানি, কীটনাশক ছিটানোর কাজে। চাষিরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তরমুজ চাষে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন। তবে তারা পুরোপুরি চিন্তামুক্ত নন।

পানি সংকটের কারণে। শেষ পর্যন্ত ফসল ঘরে তুলতে পারলেই কৃষকরা খুশি হবেন। খালবিলে পানি সংকট চলছে। অনেক দূর থেকে সেচের পানি পাম্প থেকে আনতে হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে নামকাওয়াস্তে খাল খনন, বাঁধ, ইজারা দিয়ে মাছ চাষসহ বিভিন্ন কারণে দুর্ভোগে পড়ছেন তারা পানির কারণে।

সরেজমিনে স্থানীয় একাধিক কৃষক জানান, এ অঞ্চলের প্রধান ফসল আমনের পর রবি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় তরমুজ চাষে।  কৃষকরা লোকসান খাওয়ায় প্রতিবছর এ আবাদ কমে আসছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জমিতে তরমুজ গাছ অনেক বড় হয়ে গেছে। গাছে ফুল ও ফল আসা শুরু করেছে। কিছু ক্ষেতে আবার তরমুজ বড় হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেতে সার ও কীটনাশক ছিটানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

তবে প্রচণ্ড খরার কারণে মাঠের মধ্যে খাল বিলগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ক্ষেতে সেচের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রথম দিকে অনেকে মাঠের ছোট ছোট কুয়া থেকে ক্ষেতে সেচ দিলেও সে সব পানির উৎসগুলো এখন শুকিয়ে গেছে। আবার অনেক কৃষক পাম্প ও লম্বা পাইপ দিয়ে দূরের পুকুর  থেকে সেচ দিলেও  সব খালে এখন আর পানি নেই বললেই চলে। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় এলাকার হাজারো কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

বুসন চন্দ্র নাথ নামের এক চাষি বলেন, আমি ১৬০ বিঘা জমিতে এবার তরমুজ চাষ করছি, কম বিনিয়োগ আর কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় তরমুজ চাষ করছি বছর দুই ধরে। তবে তরমুজ চাষের শেষ সময়ে সেচ সংকট তীব্র হয়ে ওঠে। সেচ থাকলে আমাদের আর কোন চিন্তা নেই। একই অভিযোগ করেন কৃষক চাষি  মাইনউদ্দীন বলেন, শেষ পর্যন্ত পানি না পেলে ফলন হবে না, আমরা শেষ হয়ে যাব। নদী-খালের ইজারা অবমুক্ত এবং খনন করে তরমুজ চাষের জন্য সেচ ব্যবস্থার দাবি তার।

সন্দ্বীপ কৃষি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বলেন, উপজেলায় এসএসিপি প্রকল্প এবং চর প্রকল্পের আওতায় তরমুজ প্রদর্শনী এবং অন্য কর্মসূচি ও উপজেলা কৃষি অফিসের নিজস্ব উদ্যোগে এ বছর সন্দ্বীপ এর বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে।

এছাড়াও উড়িরচিরসহ অন্য চরেও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় ফল উত্তোলন ও বিক্রয় শুরু হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলায় আবহাওয়া ও মাটি তরমুজ চাষের অনুকূল হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করতেছি।

তবে সেচের পানির সংকট থাকায় সেচ প্রদান করা যায়নি। সেচ প্রকল্প করা হলে আরও বেশি ফলন হবে। সেচ বিষয়ে বিএডিসিকে অবহিত করা হয়েছে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তরমুজ চাষে চাষিদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

টিএইচ