শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

সাতক্ষীরার গোপিনাথপুরে জলাবদ্ধতায় কবরস্থানে কাঠের বক্সে দাফন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার গোপিনাথপুরে জলাবদ্ধতায় কবরস্থানে কাঠের বক্সে দাফন

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩নং লাবসা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের গোপিনাথপুরে হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিস্টান মিলিয়ে প্রায় ২০০০ মানুষের বসবাস। যার সুবাধে কালক্রমে এই গ্রামে একটি মসজিদ, একটি কবরস্থান, একটি গির্জা, দুটি মন্দির ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামের মানুষের একত্র প্রচষ্টায় এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হলেও জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি এলাকাবাসী।

প্রতিবছর ৪-৫ মাস জলাবদ্ধ জীবযাবপন করতে হয় গ্রামবাসীর। মুসলিমদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, হিন্দুদের পূজা ও খ্রিস্টানদের প্রার্থনার জন্য তাদের স্ব-স্ব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যেতে হলে কারো হাঁটু, কারো কোমর সমান পানির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে বসতবাড়ির অধিকাংশ সেনিটেশন ব্যবস্থা। 

যার ফলে ঘা, চুলকানিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার শিশু, বয়স্ক, নারীসহ অধিকাংশ মানুষ। জলাবদ্ধতার জন্য বাড়ি বসবাসের অনুপেযোগী হয়ে পড়লে গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় কয়েকটি পরিবার। কিন্তু তাতেও স্বস্তি মেলেনি তাদের। কারণ বিদ্যালয় মাঠেও হাঁটু পানি। স্কুলের যাতায়াত পথে শিক্ষার্থীদের কোমর সমান পানি।

আজহারুল ইসলাম বাচা বলেন, কোন রকম মাথা গোজার মতো জায়গা পেয়েও অনেক কষ্টে বসাবাস করছি আমরা। এই দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় আব্দুল হাকিমের (৭০)। তার মৃত্যুর পর কবরস্থ করার জন্য বিপাকে পড়ে তার আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী। কারণ এলাকার একমাত্র কবরস্থানও জলাবদ্ধতার কবলে। 

চারদিকে পানি, মাঝখানে দ্বীপের মতো একটু মাথা উঁচু করে আছে কবরস্থানটি। এই পরিস্থিতিতে কোন উপায় না পেয়ে কবরস্থানে কিছুটা মাটি খুড়ে কাঠ দিয়ে কফিনের মতো তৈরি করে তার ভিতরে লাশ রেখে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত মঙ্গলবার আসরের নামাজের পর মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। 

এ ব্যাপারে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম জানান, বেতনা নদীর নাব্যতা কম থাকায় একটি গেট খুলে দেয়ার কারণে গ্রামের ভিতরে পানি প্রবেশ করে। কিন্তু পরবর্তীতে সেই গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন বেতনা নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন করতে গেলে নদী গভীর করে খনন করতে হবে। 

আর এই মুহূর্তে পানি কমাতে হলে স্যালোমেশিনের মাধ্যমে পানি সেচে কমাতে হবে। আর না হয় বাইপাস দিয়ে প্রত্যেকটা ঘেরের বেড়িবাঁধ কেটে খেজুরডাঙ্গা কাটা খালে এই পানি নিয়ে যেতে হবে। গত বছর ওই দুই পদ্ধতিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও এবছর ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর বা এলাকাবাসী কারোরই কোন রকম পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

টিএইচ