শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি

সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্য অর্জনে অসংক্রামিত রোগ মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের আস্থার স্থলে পরিনত হয়েছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। 

ফলে রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, ওষুধ, সার্বক্ষনিক ডাক্তার, আধুনিক মেশিনে তাৎক্ষনিক ব্লাড প্রেসার, ওজন ও ডাইবেটিকস চেক আপ করতে পারেন। জটিল রোগে মত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। সরজমিনে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সংক্রামক রোগ মোকাবেলায় সরকার ভ্যাকসিনসহ বিভিন্ন প্রতিষেধক টিকা রয়েছে যার ফলে খুব স্বল্প সংখ্যাক মানুষ এই রোগে মারা যায়। কিন্তু অসংক্রামক রোগ হ্রদরোগ, ডায়াবেটিকস, ক্যানসার, দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসতন্ত্রের রোগই অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারন। 

এসব রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী। অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে অসংক্রামণ রোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং অতিরিক্ত চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। 

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বহুখাতভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা ‘২০১৮-২৫’ অনুযায়ী চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতবছরের জুলাইয়ে চালু হয় অসংক্রামিত রোগ সেন্টার যা নন কমিউনিক্যাল ডিজিজ সেন্টার বা এনসিডি কর্নার নামে পরিচিত। 

এই সেন্টারের মাধ্যমে একজন রোগী আধুনিক মেশিনে তাৎক্ষনিক ব্লাড প্রেসার, ওজন ও ডাইবেটিকস চেক আপ করতে পারেন। একজন রোগীকে সেবা নিতে হলে অসংক্রামিত রোগ সেন্টার এ অনলাইনে নথিভুক্ত করতে হয়। ফলে একজন রোগী নথিভুক্ত হওয়ার পরে একটি ইউনিক আইডি ও একটি বই দেয়া হয়। 

ইউনিক আইডির মাধ্যমে এই রোগীটি বাংলাদেশে যে কোন জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজার ইউনিক আইডি খোলা হয়েছে যার মাধ্যমে প্রতিটি রোগীদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি ডায়াবেটিকস রোগের জন্য ২টি ওষুধ ও কার্ডিয়াক  রোগের জন্য ৪টি ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছেন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এনসিডি সেন্টারের সামনে চিকিৎসা নেয়ার জন্য প্রায় প্রতিদিন ২০০-২৫০ রোগী শৃঙ্খলাভাবে সারিবদ্ধ হয়ে একে একে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি অন্য রোগের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ নিচ্ছেন। 

ডায়াবেটিকস রোগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগী গোপালপুর গ্রামের আসলাম বলেন, এই রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতাল বা ডায়াবেটিকস সেন্টারে যেতে হতো যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই সেন্টার চালু হওয়ায় হাসপাতালে বিনামূল্যে আমি চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে পারছি। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প. কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, ইউনিক আইডি খোলার মাধ্যমে প্রতিটি রোগীর স্বাস্থ্য তথ্য লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হচ্ছে। অন্য রোগ হলে তা রোগীর প্রোফাইলে সংযুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে এবং গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধিক রোগীকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে বলে তিনি জানান।  

টিএইচ