প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে ফাঁদ পেতে অসংখ্য চোরা শিকারীর দল নির্বিচারে হরিণ শিকার চালিয়ে যাচ্ছে। এদের রুখতে বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে। পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচার হওয়া হরিণের মাংস আটক হওয়ায় বন বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে।
ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা সুন্দরবনের ১৬টি ফরেস্ট স্টেশন ও ৬৭ টি টহল ফাঁড়িতে কর্মরত বনরক্ষীদের নিয়ে চোরা শিকারীদের দমন করতে বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়েছেন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গহীন বনের ভেতর দিনরাত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
সম্প্রতি সুন্দরবনে উদ্বেগজনকহারে হরিণ শিকার বেড়ে যাওয়ায় খুলনা, সাতক্ষীরা, চাঁদপাই, শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তারা ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করে বনাল সংলগ্ন গ্রাম, হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সতর্কতামূলক সভা সমাবেশ শুরু করেছেন।
চোরা শিকারী দমনে এসব সতকর্তামূলক সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বনবিভাগকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। কয়রার জোড়শিং, খাসিটানা, আংটিহারা, গোলখালি, পাতাখালি, পাথরখালি, ৬নং কয়রা, ৪নং কয়রা, মঠবাড়ি, হায়াতখালি, হড্ডা, খেখেরকোনা, পাইকগাছার গড়ুইখালি, আমিরপুর, দাকোপের সুতারখালি, কালাবাগি, সাতক্ষীরার গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ, হরিণগর, কৈখালি, কদমতলা, মংলার দ্বিগরাজ, জয়মনি, বানিশান্তা, চাঁদপাইসহ অন্যত্র এলাকা দিয়ে প্রায় সময় হরিণের মাংস পাঁচার হচ্ছে।
বনবিভাগ গত তিন মাসে ২৭ জনকে হাতেনাতে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। কয়েকদিন আগে আংটিহারা কোস্টগার্ড বেড়িবাঁধের উপর থেকে ৮২ কেজি হরিণের মাংস আটক করে। তবে এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এর কয়েকদিন আগে কয়রার দেউলিয়া বাজারের মৎস্য আড়তের সামনে থেকে পুলিশ কসকেট ভর্তি ৪৪ কেজি হরিণের মাংস আটক করে এবং জড়িত তিনজনকে পাকড়াও করে আদালতে সোপর্দ করে।
জানা গেছে, কয়রা এলাকার ৩০টির বেশি হরিণ শিকারীচক্র মাছ ও কাঁকড়ার পারমিট নিয়ে সঙ্গে বান্ডিল বান্ডিল বরফ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে মণ মণ মাংস কসকেটে ঢুকিয়ে কসকেটের উপরে কিছু মাছ দিয়ে রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫শ টাকা কেজি দরে বেচাবিক্রি করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মো. মহসিন হোসেন বলেন, হরিণ শিকারীদের রুখতে বন বিভাগের লোকজন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
টিএইচ