রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

সড়কে ঝরল একই পরিবারের তিনজনসহ ১০ জনের প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়কে ঝরল একই পরিবারের তিনজনসহ ১০ জনের প্রাণ

এদশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জে একই পরিবারের ৩ জনসহ ৫ জন, পাবনায় দুই যুবক, হবিগঞ্জে দুজন, বগুড়ায় একজন নিহত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : গাজীপুরের কালীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কাভার্ডভ্যান চাপায় একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে টঙ্গী-ঘোড়াশাল বাইপাস সড়কের কালীগঞ্জের মূলগাঁও মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, টঙ্গী-কালীগঞ্জ-নরসিংদী সড়কের মূলগাঁও মাদ্রাসা সংলগ্ন দেওপাড়া এলাকায় একটি মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে টঙ্গী হতে ঘোড়াশালগামী একটি সিএনজি অটোরিক্সার সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি রাস্তায় দাঁড়ানো একটি কভার্ডভ্যানের নিচে ঢুকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার আখরাশাল এলাকার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও ছেলে মোহাম্মদ আলী, গাজীপুরের নোয়াগাঁও অষ্টগণ কলোনির সুবাস কর্মকারের ছেলে অমল কুমার কর্মকার এবং সাতক্ষীরা সদরের হাজিপুর এলাকার মগরব আলীর ছেলে নাজমুলের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় শিবপুরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আমান উল্লাহ (৫) নামে এক শিশু এবং ফুলদী গ্রামের জনাব আলীর ছেলে তমিজ উদ্দিন নামে সিএনজি চালককে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই শিশুকে মৃত্যু ঘোষণা করেন এবং সিএনজি চালককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজিনা আফরিন বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে এক শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়াও মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে আনা সিএনজি চালককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে কভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আহত সিএনজিচালক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। কভার্ডভ্যানটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

পাবনা : পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন। রোববার (১৫ সে‌প্টেম্বর) সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাতমাইল বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ঈশ্বরদীর সাহাপুরের মৃত জলিল প্রামাণিকের ছেলে শিমুল প্রামানিক ও দাপুনিয়া ইউনিয়নের ইসলাম গাতি ভাটাপারা গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে সফর হোসেন।

আহতরা হলেন- ইসলাম গাঁতি গ্রামের মৃত এলাই হোসেনের ছেলে হামিদুল, সুবহান প্রামাণিকের ছেলে মোহাম্মদ রেজাউল, সাহাপুরের আব্দুর রবের ছেলে শরিফুল ইসলাম, আনার হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন, মিজানুরের ছেলে হারেছ, রবিউল ইসলাম ও আব্দুল। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুরে পাবনার বাস টার্মিনাল থেকে ঈশ্বরদী অভিমুখে ছেড়ে যাওয়া ছাব্বির পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় অটোরিকশার এক যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অপরজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পরপরই সেখানে ফায়ার সার্ভিসের একটি উদ্ধারকারী দল এসে আহতদের উদ্ধার পাবনার বিভিন্ন  হাসপাতালে ভর্তি করে। এদের মধ্যে ৩-৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতদের মরদেহ পাবনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে নিয়ে সদর থানায় রাখা হয়েছে। পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। 

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতে উপজেলার চন্ডিছড়া চা বাগান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানিয়েছেন চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায়। নিহতরা হলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুদিয়াখলা গ্রামের মৌলদ মিয়ার ছেলে ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজ সরকার এবং একই উপজেলার তালুগড়াই গ্রামের হাজী কিম্মত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান।

এ বিষয়ে ওসি হিল্লোল রায় বলেন, হাফিজ ও মোস্তাফিজুর মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে চন্ডিছড়া চা বাগানে মাজারের আগে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। পরে পেছন থেকে একটি ট্রাক তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান।

বগুড়া : বগুড়ায় বালুবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে বিপুল নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন শাওন নামের আরেক যুবক। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার সাবগ্রাম ইউনিয়নের অদ্দিরগোলা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই লালন হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।  বিপুল শহরের মালগ্রাম উত্তর পাড়ার জুয়েল মিয়ার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এএসআই লালন হোসেন জানান, বিপুল তার বন্ধুর  মোটরসাইকেল যোগে গাবতলীর দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবোঝাই এক ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে বিপুল নিহত এবং মোটরসাইকেলে থাকা শাওন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন আহত শাওনকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। নিহতের মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

টিএইচ