বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

হত্যা মামলায় বামনার ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি

হত্যা মামলায় বামনার ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুণিয়া গ্রামে ১২ বছর পূর্বে এক মানষিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে  চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। 

ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় মামলার প্রধান আসামি ওই ইউনিয়নের তৎকালীন ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি ১ শাখা। 

গত ২রা আগস্ট সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানা গেছে। এছাড়াও একই কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত আর একটি চিঠিতে কেন তাকে চুড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

এর আগে গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের বড় তালেশ্বর গ্রামের জনৈক মো. লিটন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে হত্যাকান্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা রয়েছেন এবং সিআইডির তদন্তে তিনিই প্রধান আসামি উল্লেখ করে তার অপসারণ দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করেন। 

ওই আবেদনের প্রেক্ষীতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি ১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের গতবছরের ২রা নভেম্বর তারিখে স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বরগুনা জেলা প্রশাসকে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। 

প্রতিবন্ধীকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা ও মামলায় প্রধান আসামি তিনি হওয়ায় বরগুনা জেলা প্রশাসক তাকে অপসারণের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসকের সুপারিশ পাওয়ার পরে গত বুধবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। 

তবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ২০১২ সালে ২২ মার্চ বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী মো. হাবিবুর রহমান সিকদারকে চোর সন্দেহে আটক করে গ্রামবাসী। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। পরে তাকে স্থানীয় ইউপি নিয়ে আসেন।

মামলার সূত্রে জানাগেছে, ইউপিতে আনার পর চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ ও তার সহযোগীরা মুমূর্ষু ওই প্রতিবন্ধীকে পুনরায় বেধরক পেটায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

তবে এই হত্যা কান্ডের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ জড়িত ছিলেন না দাবি করে তিনি জানান, যখন শিংড়াবুনিয়া থেকে আমি খবর পাই একজনে চোর সন্দেহে আটক করা হয়েছে তখন আমি বামনা সদরে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমাকে যারা সংবাদটি জানিয়েছিলো তাদেরকে তখনই আমি বলেছি যাতে তার ওপর কেউ আঘাত না করে। আমি বুকাবুনিয়া পরিষদে আসার পরে স্থানীয়রা আমার কাছে তাকে নিয়ে আসে। 

ততক্ষণে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়েছে। আমি পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই সে মারা যান। আমি তার গায়ে হাত দেইনি। অথচ রাজনৈতিক শত্রুদের পরামর্শে আমাকেই প্রধান আসামি করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, চেয়ারম্যানের সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন শুক্রবার (৪ আগস্ট) পেয়েছি।  

টিএইচ