জেলায় সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জন হয়নি। বেঁধে দেয়া সময়ে আগামী এক মাসে তা পুরোপুরিভাবে অর্জন হবে কিনা এ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জে ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৭ হেক্টর জমিতে থেকে প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল।
এরপর গত ৩ এপ্রিল থেকে সরকারের গুদামে ৩২ টাকা কেজি অর্থাৎ ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ বোরো ধান, ৪৫ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল এবং ৪৪ টাকা কেজিতে আতপ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকার কথা। নির্দেশনা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরুর তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আর মাত্র এক মাস সময় বাকি আছে। জেলার ৯টি উপজেলা থেকে ১৪ হাজার ৭৬০ টন ধান সরকারের গুদামে সংগ্রহ হওয়ার কথা।
কিন্তু গত ২১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসে মাত্র ৪ হাজার ৭৭৬ টন সংগ্রহ হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়ার জন্য আরও প্রায় ১০ হাজার টন ধান এক মাসে সংগ্রহ করতে হবে।
হাওরাঞ্চলের কৃষকদের মতে, অল্প সময়ে এত ধান সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। এদিকে, জেলায় ১৪ হাজার ৯৬৬ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সেদ্ধ চাল মাত্র ৭ হাজার ২৩৬ ও ৪ হাজার ৮৪৪ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আতপ চাল ৩ হাজার ৭৯৮ টন সংগ্রহ হয়েছে। এ হিসেবে আতপ চাল সংগ্রহ আশানুরূপ হলেও ধান এবং সেদ্ধ চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও নেই।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, সরকারের গুদামে ধান বিক্রির জন্য যে আর্দ্রতা নির্ধারিত, ধান সেই আর্দ্রতা পরিমাণ শুকালে ওজন কমে যায়। এছাড়া খোলা বাজারে ভেজা ধানের দামও এক হাজারের বেশি। সেজন্য প্রান্তিক কৃষকরা সরকারের গুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী না। এজন্য সেদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের গতি কম।
তবে বেধে দেয়া সময় অর্থাৎ আগামী ৩১ আগস্টের পর আরও সময় বর্ধিত করে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যেতে পারে বলেও দপ্তরটি জানায়।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় হিলালপুর গ্রামের ওয়ারিশ মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক জানান, সরকারের গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে। ধান প্রদানকারী কৃষকদের তালিকা প্রণয়নেও নানা অনিয়ম হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
টিএইচ