শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

হাটহাজারীতে চলছে কৃষিজমির মাটি কাটার মহোৎসব

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হাটহাজারীতে চলছে কৃষিজমির মাটি কাটার মহোৎসব

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পরিবেশ আইন অমান্য করে দিবারাত্রি নির্বিচারে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে প্রভাবশালী মাটি খেকো চক্র। যেন তারা বৈধভাবে মাটি কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাদের কর্মকাণ্ড দেখে যে কারো মনে হবে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। 

তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও থামানো যাচ্ছেনা তাদের এই উৎসব। নির্বিচারে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে ফেলার কারণে একদিকে চাষাবাদের অনুপযোগী হচ্ছে জমিগুলো, অন্যদিকে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়ছে। এছাড়া কৃষি জমিগুলোতে ফসল উৎপাদনে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং মাটি বহনকারী গাড়িগুলো গ্রামীণ সড়কে চলাচল করার কারণে ধুলাবালিতে একাকার হচ্ছে সড়কের পাশে অবস্থিত বাড়িঘর। 

ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কৃষিজমির মাটি বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে অসাধু চক্রের সদস্যরা। তারা এতটাই প্রভাবশালী হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ব্যবস্থা নিতে কিংবা কথা বলতে সাহস পায় না। প্রশাসন অভিযান চালালে সাময়িক মাটি কাটা বন্ধ রাখলেও পরে আবারো মাটি কাটার মহোৎসবে মেতে উঠে তারা। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের প্রতি এসব অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সচেতন মহল। 

সরেজমিনে উপজেলার ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া, গুমানমর্দ্দন, চিকনদন্ডী, উত্তর মাদার্শা, দক্ষিণ মাদার্শা ও শিকারপুর এলাকার অর্ধশতাধিক স্থানে ফসলি জমির মাটি কাটার চিত্র দেখা যায়। এসব ফসলি জমির মাটি আবার ভরাট হচ্ছে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির মালিকানাধীন জায়গায়। এছাড়া অনেকে কৌশল অবলম্বন করে আবাদী জমিতে পুকুর খননের নামে মাটির বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গেলে মৎস্য চাষের বিষয় সামনে নিয়ে আসছে। 

সমপ্রতি দেখা গেছে উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ছড়ারকুল সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে বালুর টালের বিপরীতে মহাসড়কের পূর্ব পাশে লাগোয়া ফসলি জমির মাটি এস্কেভেটর দিয়ে কেটে দেদারছে বিক্রি করছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন সিকদার বলেন, কৃষি জমির টপসয়েল কেটে নেয়ার ফলে উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে থাকে, যা জমিকে বন্ধ্যা করে ফেলে। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমিগুলোতে জৈব শক্তি কমে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে যাবে। 

এ বিষয় জানতে চাইলে হাটহাজারী ইউএনও এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে আমারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তদের আর্থিক জরিমানা করে যাচ্ছি, যা অব্যাহত রয়েছে। বিগত এক বছরে ১৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এরমধ্যে বিগত তিন মাসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে ৯টি, এতে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা।

টিএইচ