বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল, ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Post

১৮ বছরেও হয়নি সংস্কার আশ্রয় মিললেও নেই স্বস্তি

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

১৮ বছরেও হয়নি সংস্কার আশ্রয় মিললেও নেই স্বস্তি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারী গ্রামে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৮০টি আশ্রয়হীন পরিবারের জন্য একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। নীলকমল নদীর তীরে ছয় একরজুড়ে নির্মিত এ প্রকল্প একসময় আশ্রয়হীন মানুষের নিরাপদ মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে এটি এখন প্রায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সময় যত গড়িয়েছে, ততই জরাজীর্ণ হয়েছে প্রকল্পের ঘরগুলো। টিনের চাল ও বেড়া ভেঙে গেছে, অনেক ঘরের চালায় বড় বড় ফাটল ধরেছে। বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়লেই ঘরের ভেতর পানি পড়ে, আর শীতকালে প্রবল ঠান্ডা বাতাস বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। গ্রীষ্মের খরতাপে এসব টিনের ঘরগুলোর ভেতর তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে ওঠে। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে এই আবাসন প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আর যারা এখনও সেখানে বসবাস করছেন, তারা দুঃসহ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

আবাসনের বাসিন্দা ছকিলা বেওয়া বলেন, বৃষ্টির সময় ঘর ভিজে যায়, রাতে বসে থাকতে হয়। শীতকালে এত ঠান্ডা পড়ে যে ঘুমানোই যায় না। কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। পলিথিন দিয়ে কোনোমতে চাল ঢেকে কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আব্দুল জলিল আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের দুরবস্থা দেখার কেউ নেই। দিনের পর দিন অভাব-অনটনের সঙ্গে লড়াই করছি। অনেকেই না খেয়ে থাকেন, কেউ বা এক বেলা খেয়ে কোনো রকমে দিন কাটান। অথচ এ আশ্রয়কেন্দ্র এক সময় আমাদের আশার আলো হয়ে এসেছিল।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিএনপি সরকারের সময়ে এই প্রকল্পটি প্রস্তাবিত হওয়ায় পরবর্তী আ.লীগ সরকার এটিকে অবহেলা করেছে। দীর্ঘ ১৮ বছরেও কোনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ অবস্থায় বাসিন্দারা সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অসহায় বাসিন্দারা দ্রুত সরকারি সহায়তা ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা নিরাপদ ও স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে পারেন। তাদের আশা, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন এবং আশ্রয় প্রকল্পটি আবারও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী ইউএনও রেহেনুমা তারানুম বলেন, বালাটারী আবাসন প্রকল্পসহ অন্য জরাজীর্ণ আশ্রয় প্রকল্পগুলোর বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

টিএইচ