সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

সবজি-মাছ, ডিম-পেঁয়াজের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবজি-মাছ, ডিম-পেঁয়াজের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে 

তিন সপ্তাহ আগে ঢাকাসহ সারাদেশে কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত হয়। সেসময় বাজারগুলোতে পণ্যের সরবরাহ কমে দাম বেড়ে যায়। সেই অস্থিরতা এখনো কাটেনি বরং উল্টো সংকট যেন দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। সবজি, মাছসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো কোনো পণ্যের দাম কমেনি। বরং একটু একটু করে আরও বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি। অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে।

অন্যদিকে, প্রতি কেজি চাষের মাছের দাম এখন ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। আর দেশি মাছগুলোর দাম যেন আকাশছোঁয়া, বিক্রি হচ্ছে আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তিতে।

বেশ কয়েক মাস হলো ডিমের বাজারে চলছে অস্থিরতা। শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজারে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অর্থাৎ সাধারণ মানুষের একটি ডিম খেতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া আরেক পণ্য পেঁয়াজ। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি যার দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

পণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজারদরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

মালিবাগ বাজারের রিকশাচালক নান্টু মিয়া বলেন, দামের চোটে আমরা কিছুই কিনতে পারছি না। আগে মাছ-মাংস না খেতে পারলে শাকসবজি খেয়ে থাকতাম। এখন সেটাও সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে চললে গরিব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, খেতে সবজি পচে নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ বিঘ্ন হওয়ায় দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে গোল বেগুন ১২০-১৪০ টাকা এবং লম্বা বেগুন ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলা, কচুরমুখি, বরবটি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। আর ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙা ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। কম দামের মধ্যে মুলার কেজি ৫০-৬০ টাকা আর পেঁপে ৪০-৫০ টাকা।

দর বাড়তি মাছ-মাংসেরও। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কম আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনেন পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজি এখন ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা।

শান্তিনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, এমনিতেই কয়েক সপ্তাহ ধরে মাছের দাম বেশি ছিল। এর মধ্যে ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম বেড়েছে।

টিএইচ