চলমান বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই ৯ মাসে দেশটিতে ৭৫৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি। মার্কিন অফিসিয়াল সোর্স ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২২ সময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পোশাক আমদানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অটেক্সের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৭.৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে তাদের পোশাক আমদানি ৫০.৯৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এ সময়ে বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৪.৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৮.৫৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক আমদানির ৩য় বৃহত্তম উৎস হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে।
চীন ২২.৪৮ শতাংশ শেয়ার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সর্ব বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী দেশ। এরপরে ১৮.৫১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ভিয়েতনামের অবস্থান।
চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২৮.৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১৭.৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি ১৪.৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, বছরওয়ারি ৩৪.৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারীদের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া ৫৪.৬৬ শতাংশ, ভারত ৫৩.৩৯ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৪৬.৫৮ শতাংশ, পাকিস্তান ৪০.১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৯.৬১ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চেইন শপ ওয়ালমার্টসহ শীর্ষ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত কয়েক মাস অনেক অর্ডার স্থগিত রেখেছিল। পরে সেসব স্থগিত করা অর্ডার অনুযায়ী তারা পোশাক নিতে আগ্রহ দেখায়। আমরা তাদের চাহিদামতো পোশাক রপ্তানি করেছি। এর ফলে দেশটিতে আমাদের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।
এ ছাড়া কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। এ কারণেও রপ্তানি আয় বেশি হয়েছে। তৃতীয়ত-মার্কিন বাজারে আমরা হাই ভ্যালু প্রডাক্ট রপ্তানি বাড়িয়েছি। আশা করছি আগামী আরো কয়েক মাস এ অবস্থা বিরাজ থাকবে। তবে শিল্পে এখনো গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে। যদি গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে। ’
টিএইচ