শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

চবিতে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চবিতে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিভিন্ন সময় অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সুনাম বিনষ্টের দায়ে আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী মো. জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘৯ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় সংঘঠিত সংঘর্ষ ও মারধরের প্রতিটি ঘটনা ভালোভাবে যাচাই–বাছাই করেই এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপে জড়াবেন না মর্মে অঙ্গীকার দিয়েছেন। অপরাধ বিবেচনায় তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়েছে।

গত বছরের ১১ আগস্ট রাতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলে ছাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তাসফিয়া জান্নাত নোলককে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি চবি ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক।

জন্মদিনের কেক কাটতে না যাওয়ায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুই ছাত্রলীগকর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন— লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরশিল আজিম নিলয় ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিককে।

৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেয়ার ঘটনায় দুই ছাত্রলীগকর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শহিদুল ইসলাম।

এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর এ এফ রহমান হলে দেশীয় অস্ত্র হাতে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, হল কক্ষ ভাঙচুরসহ মূল্যবান সম্পদ বিনষ্টকরণ ও কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা হুমকি প্রদর্শন ঘটনায় ছয়জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এরা হলেন- সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের অয়ন কান্তি সরকার, একই শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের লাবিব সাঈদ ফাইয়াজ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের সিফাতুল ইসলাম, একই বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের মো. মোবারক হোসেন ও একই সেশনের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের নাহিদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুদিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপপক্ষ। এতে উভয়পক্ষের ১১ জন আহত হন। আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। এ দুই দিনের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

তারা হলেন, ফিন্যান্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ। বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।

টিএইচ