সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

ঢাবি ছাত্রের আত্মহত্যা

ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাবি ছাত্রের আত্মহত্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক শিক্ষার্থী। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত পৌঁনে ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম কাজী ফিরোজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর রুমে থাকতেন। সেই হলেরই আবাসিক ছাত্র ছিলেন। চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে।

বিজয় একাত্তর হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকে রাত পৌঁনে একটার দিকে হঠাৎ করে কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পায় শিক্ষার্থীরা। ধারণা করা হচ্ছে তিনি ছয় কিংবা সাত তলা থেকে পড়ে যান।

পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছাত্র ওয়াহিদুল আলম জানান, বুধবার ভোর রাত আনুমানিক ১২টা ৫০ থেকে ৫৫ মিনিটের মধ্যে কাজী ফিরোজ একাত্তর হলের যমুনা ব্লক থেকে পড়ে যান। যেখানে তিনি পড়েছিলেন, সেই স্থানটি ছিল মাটির। তার পাশেই পাকা রাস্তা। সেখানে ছিল তার হাত।

রুমমেটের বক্তব্য

ফিরোজের বেডমেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমি লাইব্রেরি থেকে যখন রুমে আসি, এর কিছুক্ষণ পর ফিরোজ রুমে আসে। সাড়ে ১০টার দিকে সে সবাইকে বলছে, ‘তোরা কেউ আমার কাছ থেকে কোন টাকা পাস কি না বল। এমনকি দুই টাকা হলেও বল। আমি দিয়ে দিতে চাই। পেলে এখনই বল। এর কিছুক্ষণ পর সে মানিব্যাগ এবং মোবাইল রেখে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল। তখন আমি বলি, ‘কই যাচ্ছিস?’ সে বলে, ‘আমি একাত্তর হলে যাচ্ছি, একটু কাজে।’ এরপর আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি"। মাসুম বলেন, "তার জন্য রাখা খাবারটা সে অল্প একটু খেয়েছে। বেশির ভাগ খাবারই সে রেখে দিয়েছিল"।

খাতায় যা লেখা ছিল

ফিরোজের একটি খাতায় লেখা ছিল, "মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নাই, এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোনো অধিকার নাই। আমার মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে তোমাকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ।’

এ বিষয়ে আজ সকালে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যম কে জানান, ঘটনাটি শুনেই আমি হাসপাতালে এসেছি। নিহতের বড় ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। আমরা তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দিবো।

টিএইচ