সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

দেশীয় অস্ত্রসহ জাবি ছাত্রলীগের মহড়া, সাংবাদিক লাঞ্ছিত

জাবি প্রতিনিধি

দেশীয় অস্ত্রসহ জাবি ছাত্রলীগের মহড়া, সাংবাদিক লাঞ্ছিত

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলায় মহড়া দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের মীর মশাররফ হোসেন হলের নেতাকর্মীরা। এসময় সংবাদ সংগ্রহকালে দুই সাংবাদিককে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার ভাসানী চত্তরে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত বুধবার মীর  মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের কিছু শিক্ষার্থী মারধর করে। এই মারধরের প্রতিশোধ নিতে সন্ধ্যায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশে একদল শিক্ষার্থী রামদা, লোহার পাইপ, কাচের বোতলসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হল থেকে মহড়া দিয়ে বটতলার ভাসানী চত্বরে ছুটে আসে।

এদিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ মহড়ার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আগে থেকেই অবস্থান নেয় প্রক্টরিয়াল টিম। শিক্ষার্থীরা বটতলার ভাসানী চত্বরে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের বাঁধা প্রদান করে। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থী ও প্রক্টরকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় স্লোগান ও গালিগালাজ দিতে থাকে।

এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বাংলাদেশ টুডের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ ও ডিবিসি নিউজের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুনের ওপর চড়াও হয়ে মারধরের চেষ্টা করে হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। বিক্ষিপ্তভাবে হামলা করে জুবায়ের আহমেদের গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়।

পরে সাংবাদিককে হেনস্থার ঘটনায় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে হলের নেতাদের নির্দেশে বটতলা এলাকা ত্যাগ করে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা। এসময় বটতলার রাস্তাজুড়ে তাদের সাথে নিয়ে আসা কাচের বোতল ভাঙচুর করতে করতে তারা হলে ফিরে যায়।

এসময় ঘটনাস্থলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদ (পরিবেশ বিজ্ঞান-৪৪), সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান (ইতিহাস-৪৪), সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ (মার্কেটিং-৪৪), সহ-সভাপতি সজীব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বিপ্লব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব উপস্থিত ছিলেন। তাদের নির্দেশেই মারধরের প্রতিশোধ নিতে হল থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়ায় বের হয় শিক্ষার্থীরা।
 
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘আমরা সাংবাদিককে হামলার ঘটনার সম্পর্কে জানতাম না। জানলে আসতামও না। এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’

সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আসতে দেরি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশিয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, এই ঘটনাটি অত্যাশিত। আমরা এই ধরনের ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। এক্ষেত্রেও সেটিই করা হবে। এর বাইরে কোন ধরনের অভিযোগ পেলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে। 

টিএইচ