বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী ও বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের মধ্যে বাক-বিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থী ও এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। এ সময় ৩ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারে কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ৯টা থেকে ঢাকা-পটুয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রায় ১ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, হেলমেট না থাকায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেল আটকে ৭৫ হাজার টাকার মামলা দেয় ৷ শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয় দিলে পুলিশের সাথে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের লাঠির আঘাতে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
আটক তিন শিক্ষার্থী হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী আলভীর ইসলাম, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রমজান হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের টিআই আবদুর রহিম দাবি করেন, মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় দায়িত্বরত সার্জেন্ট মনিরুল হাসান মোটরসাইকেলটি আটক করেন। সেসময় মোটরসাইকেল আরোহীরা নিজেদের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেন এবং ফোন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ থেকে ২০ জনকে খবর দিয়ে ডেকে আনেন।
তারা এসে অতর্কিতভাবে সার্জেন্ট মনিরুল হাসান ও কনস্টেবল মোস্তফার উপর হামলা চালায়। এক পর্যায় ওয়্যারলেস কেড়ে নিয়ে কনস্টেবল মোস্তফার মাথায় মারাত্মক আঘাত করেন তারা। কনস্টেবল মোস্তফার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম রানা বলেন, মামলা করার পরেও পুলিশ কি গায়ে হাত দিতে পারে, মাথা ফাটিয়ে দিতে পারে? এ কেমন আইন? আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর তাদের কিসের এত ক্ষোভ?
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ এ আর মুকুল পিআরএম বলেন, মেডিকেলের সামনে দায়িত্বপালনের সময় আমাদের এক ট্রাফিক পুলিশের সাথে হেলমেট না পড়ায় তিন শিক্ষার্থীর সাথে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে কাগজপত্র না দেখাতে পারলে মোটরসাইকেল আটকে রাখা হয়। আরো শিক্ষার্থীরা আসলে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে কোতোয়ালী থানার পুলিশ এসে ৩ জনকে আটক করলে বাকিরা পালিয়ে যায়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.খোরশেদ আলম বলেন, সড়ক অবরোধের কথা শুনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসি। আমরা শুনেছি মেডিকেলের সামনে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের বাক-বিতণ্ডা হয়েছে ৷ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়েছি। পুলিশের সাথে কথা বলে বিষয়টি যেভাবে সমাধান করলে ভালো হয় সেভাবেই করবো। উল্লেখ্য, আটককৃতদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
টিএইচ