অশালীন শব্দ ব্যবহার করা, শারীরিকভাবে আঘাত করা, কারো সম্পর্কে গুজব ছড়ানো, ইঙ্গিতবাহী চিহ্ন প্রদর্শন, মানসিক চাপ দেওয়াকে বুলিং বা রাগিং হিসেবে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় এনে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুলিং বা র্যাংগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।
এ নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত হলে তা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নীতিমালায় বলা হয়, বুলিং বা র্যাগিং হলো ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিকর বা বেদনাদায়ক এবং আক্রমণাত্মক ব্যবহার, যার প্রতি করা হয় তার নিজেকে তা থেকে রক্ষা করা কষ্টকর হয়ে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং বা র্যাগিং বা হেজিং বা ফ্যাগিংয়ের ধরন।
যেমন, মৌখিক বুলিং বা র্যাগিং, শারীরিক বুলিং বা র্যাগিং, সামাজিক বুলিং বা র্যাগিং, সাইবার বুলিং বা র্যাগিং, সেক্সচ্যুয়াল বুলিং বা র্যাগিং, জাতিগত বুলিং বা র্যাগিং। বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে `বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি’ গঠন করতে হবে।
প্রতি ছ`মাস অন্তত একবার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ বিষয় থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ আয়োজন করবেন। এছাড়া বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধ ও প্রতিকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক কর্মচারীদের করণীয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।
বুলিং বা র্যাগিংয়ে কোনো শিক্ষক অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে যাদের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ কিংবা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ প্রযোজ্য নয়, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
বুলিং বা র্যাগিংয়ে শিক্ষার্থীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বুলিং বা র্যাগিংয়ের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাদের বিধিমালা অনুয়ায়ী বুলিং বা র্যাগিংকারীকে সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করবেন।
বুলিং বা র্যাগিং এ গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং বা এডহক বা বিশেষ কমিটির কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে বোর্ড কর্তৃক তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ওই কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অপসারণ করা যাবে অথবা সংশ্লিষ্ট কমিটি বাতিল করা যাবে।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণসহ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারী মামলা করা যাবে।
সরকার প্রয়োজন মোতাবেক সময়ে সময়ে প্রণীত নীতিমালাটি পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন করতে পারবে।
টিএইচ