সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post
বকেয়া ৯ লাখ ৮০ হাজার

হল ডাইনিং থেকে বাধ্য হয়ে গুটিয়ে নিতে হলো ব্যবসা

আসলাম বেগ (জাককানইবি)

হল ডাইনিং থেকে বাধ্য হয়ে গুটিয়ে নিতে হলো ব্যবসা

তিন বছরের অধিক সময় যাবত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নি-বীণা হলের ডাইনিং পরিচালনা করে আসছিলেন তারা মিয়া। কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও গত ২২ মার্চ হল ডাইনিং এর ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন তিনি।

ব্যবসা হঠাৎ গুটিয়ে নিতে হওয়ায় বিপাকে পরে তার মিয়া জানান, হল ডাইনিং পরিচালনা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা হলের ছাত্রদের কাছে বাকি পরে রয়েছে। ব্যবসা বন্ধ করে চলে যেতে হবে জানতে পারলে দেনা-পাওনার বিষয়ে আগে থেকে একটু সতর্ক হওয়া যেত।

এমন আকস্মিকভাবে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হওয়ার বিষয়ে তারা মিয়া জানান, ‘প্রশাসন আগে থেকে আমাকে আগাম কোনো নোটিশ দেয়নি। সপ্তাহ দুয়েক আগে হঠাৎ করে হল প্রভোস্ট স্যার আমাকে ডেকে বলেন, ‘ডাইনিং ছেড়ে দেয়া লাগবে তুমি আস্তে আস্তে জিনিসপত্র গুছিয়ে নাও।’ হল প্রভোস্টের বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার হাতও রয়েছে। সে নিজের নিকটতমদের ডাইনিং পরিচালনার দ্বায়িত্ব দিতেই আমাকে বাদ দিয়েছে।’

ডাইনিং পরিচালনার নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে কি না ও বাকি যারা খেয়েছে তার সুনির্দিষ্ট হিসাব আছে কি না জানতে চাইলে তিনি অপারগতা জানিয়ে বলেন, আমি হল প্রশাসনের সাথে দালিলিক চুক্তির জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই আমাকে ডাইনিং পরিচালনার দ্বায়িত্ব থেকে বাদ দেয়া হলো। আর কিছু ছাত্র বাকির হিসাব জানতে এসে হিসাবের খাতা ছিড়ে নিয়ে গেছে। তাই আগের হিসাবগুলো রাখা সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৩ সালের ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার হিসাব রয়েছে।

‘ছাত্রলীগের নেতার হাত রয়েছে’ এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, আমরা হল প্রভোস্ট নাকি হাউজ টিউটর যে আমরা হলের ডাইনিং নিয়ন্ত্রণ করবো। চুক্তি ছাড়া হল প্রশাসনের সাথে সে ব্যবসা করছে এটা এখন তার এবং হল প্রশাসনের মধ্যকারের বিষয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে তারা মিয়ার কাছে বাকির বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। এবং তাকে বলেছি, যারা বাকি খেয়েছে তাদের নাম আমাদেরকে দিলে আমরা টাকা তুলে দিতে তাকে আরো সহায়তা করবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্নি-বীণা হলের প্রভোস্ট কল্যানাংশু নাহা বলেন, ‘কিছু নেতার নাম ভাঙিয়ে তাদের কর্মীরা বেহিসাবি খেয়ে গেছে। বাকি তো তবু মানা যায়, যারা মাগনা খেয়েছে সেই হিসাবই বিরাট। এখন তারা মিয়াকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি তাকে রাখতে। কিন্তু পারিনি ৷ এখন নতুন যে ডাইনিং পরিচালক এসেছে সেও নেতার লোক। এখন আমার চাওয়া হচ্ছে, যারা এত বাকি খেয়েছেন, অন্তত মানবিকতার দৃষ্টি থেকে হলেও সম্পূর্ণ না হোক, পঞ্চাশ ভাগ টাকা হলেও ফেরত দেন।  এতে তার একটু হলেও সন্তুষ্টি আসবে।’

টিএইচ