ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক নির্মাণ করেছেন সিনেমা ‘যাও পাখি বলো তারে’। রোমান্টিক গল্পের সিনেমাটিতে প্রথমবার জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আদর আজাদ ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, সঙ্গে আছেন চিত্রনায়ক শিপন মিত্র।
সিনেমাটি আগামী ৭ অক্টোবর দেশজুড়ে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। মুক্তি সামনে রেখে প্রচারণায় সক্রিয় সিনেমার টিম।
এ উপলক্ষে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে জমকালো এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টাইগার মিডিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে সিনেমাটির ট্রেলার মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনেমার নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, অন্যান্য কলাকুশলীরা ও চলচ্চিত্রের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ক্যারিয়ারের তৃতীয় সিনেমা প্রসঙ্গে আদর আজাদ বলেন, গ্রাম বাংলার মিষ্টি প্রেমের একটা সিনেমা ‘যাও পাখি বলো তারে’। এর গানগুলো সবার মন ছুঁয়ে যাবে। গল্প এবং মানিক স্যারের মেকিং মন ভরাবে সবাইকে। আমরা সবাই মজা করে সিনেমাটির শুটিং করেছি। আবার ইমোশনাল দৃশ্যগুলোতে কাজ করতে গিয়েই নিজেরা কেঁদে ফেলেছি। এই সিনেমাটি বর্তমান সময়ে সিনেমার যে জোয়ার তাকে আরও বেগবান করবে বলে আমার এবং আমাদের প্রত্যাশা। আপনারা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখবেন, এই অনুরোধ রইল।
মাহি বলেন, এখনকার সিনেমা নিয়ে চাপাবাজি হয়। তবে কিছু কাজ থাকে যেটা নিয়ে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে কিন্তু বলতে পারি না। অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি না। এই সিনেমার প্রতিটি চরিত্রে সবাই দারুণ অভিনয় করেছেন। প্রত্যেকটি দৃশ্য দেখে আমাকে কাঁদতে হয়েছে, যা দেখে দর্শকও কাঁদবে। এখানে অভিনয় করিনি। চরিত্রের ভেতর মিশে গেছি। কতটুকু পেরেছি তা দর্শক বলতে পারবে। এই শুটিংয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে।
যোগ করে মাহি আরও বলেন, ১০ বছরের ক্যারিয়ারে কখনো এত মজা করে শুটিং করিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ‘যাও পাখি বলো তারে’ আমার সেরা সিনেমা। যারা ভালোবাসতে ভুলে গেছে তারা এই সিনেমা দেখলে নতুন করে ভালোবাসবে। সিনেমাটিতে কাজ করে ঘোরের মধ্যে ছিলাম। প্রতিটি মানুষের জীবনে মজনু (আদর আজাদ) আছে। সবাইকে অনুরোধ করব সিনেমাটি দেখার জন্য। ভালোবাসা কি এই সিনেমাটি দেখলে বোঝা যাবে। মানিক স্যারের সঙ্গে কাজ করে সবসময়ই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এই সিনেমায় অভিনয় করে সত্যি তৃপ্তি পেয়েছি। আশা করি, অনেক দিন পর দর্শক আমার ভালো একটি সিনেমা উপভোগ করবেন।
শিপন বলেন, সিনেমায় আমার চরিত্রটি একটু ভিন্ন। গল্পটা শুনে খুব পছন্দ হওয়াতে কাজটি করি। এতে আমাদের আশেপাশের গল্প বলা হয়েছে। সিনেমায় গ্রামের মাটির গন্ধ পাবে। দর্শকের উপভোগ করার মতো একটি সিনেমা হয়েছে। সবাইকে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখার অনুরোধ রইল।
সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক বলেন, আমি অনেক সিনেমাই বানিয়েছি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছি। তবে আমি নিঃসন্দেহে বলতে চাই, আমি সবচেয়ে তৃপ্তি পেয়েছি এই সিনেমা বানিয়ে। এখানে সব শিল্পীরা ভালো কাজ করেছেন। সিনেমাটি আপনারা দেখবেন। আপনাদের কেমন লেগেছে জানাবেন।
এর আগে প্রকাশ পায় সিনেমাটির প্রথম পোস্টার। সিনেমার নামের মতো এর প্রথম পোস্টারে রয়েছে না পাওয়ার গল্প। সাদা শুভ্র জমিনের ওপর কালোর ছায়া। এর মাঝেই সিনেমার প্রধান চার চরিত্র আদর আজাদ, মাহিয়া মাহি, রাশেদ মামুন অপু ও শিপন মিত্রের ছবি। তাদের প্রত্যেকের চেহারায় বেদনার ছাপ। হয়ত তারা বলতে চাইছেন- এমন তো হওয়ার কথা ছিল না! নান্দনিক এ পোস্টারটি প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়।
ক্লিওপেট্রা ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত এই সিনেমায় আদর-মাহি ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু, সুব্রত, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু (বড়দা মিঠু), মাসুম বাশার, অভিনেত্রী রেবেকা রউফ, মিলি বাশার, লাবণ্য প্রমুখ। সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক তমালিকা আকরাম।
জাহিদ হাসান অভির দ্য অভি কথা চিত্র পরিবেশিত ‘যাও পাখি বলো তারে’ সিনেমার কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আসাদ জামান। এর গান লিখেছেন সুদীপ কুমার দীপ, এ মিজান ও সঞ্জীবন চক্রবর্তী। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করেছেন ইমন সাহা। গানের সঙ্গীত করেছেন জেকে মজলিশ, বেলাল খান ও রেজওয়ান শেখ এবং গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বেলাল খান, কোনাল, ইলিয়াস হোসাইন, সায়েরা রেজা, মোহাম্মদ জসিউর রহমান সেতু ও বিন্দিয়া খান। সিনেমাটির লাইন প্রযোজক হিসেবে আছেন ইমদাদুল ইসলাম যিকরান।
কেএস