মহান ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালনে তাড়াশের ২১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও ১৪৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মোট ২১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬টি। শহীদ মিনার আছে ৫৫টিতে আর শহীদ মিনান নেই ৮১টি প্রতিষ্ঠনে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলে ৪০টি যার মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৮টিতে আর নেই ৩২টি প্রতিষ্ঠানে। মাদ্রাসা ২০টি যার মধ্যে শহীদ মিনার নেই একটিতেও। কারিগরি কলেজ ৬টি যার মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৫টিতে এবং জেনারেল কলেজ ৮টি যার মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৫টিতে।
তবে নওগাঁ জিন্দানি কলেজে নির্মাণাধীন রয়েছে। সরকারিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করার নির্দেশ থাকলেও এই ১৪৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করতে পারবে না নতুন প্রজন্ম। ফলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ভাষা আন্দলনের শহীদদের স্মরণ করা থেকে।
তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে না ওঠায় গুরুত্ব হারাচ্ছে এই দিবসটি। ২১ ফেব্রুয়ারির এই দিনটিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জরো হয় সর্বস্তরের মানুষ। বাঁশ, কাঠ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দু-চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গুল্টা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমপ্রতি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও, গুল্টা বাজারে পাশাপাশি গুল্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুল্টা বাজার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি জনবহুল এলাকা হওয়ার পরেও এখানে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কোনো শহীদ মিনার নেই।
তাড়াশে একটি সরকারি কলেজও রয়েছে কিন্তু শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সেখানেও নেই কোন শহীদ মিনার। বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিলা রানী দাস বলেন, সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিও করেন।
তাড়াশ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টিতে শহীদ মিনার আছে। অবশিষ্ট বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তিপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তৃণমূল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, আমাদের কর্তিপক্ষ ও স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
তাড়াশ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমা বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে তাগিদ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্ট তার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করছে। প্রতি বছরে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল থেকে আমরা শহীদ মিনার নির্মাণ করে থাকি।
টিএইচ