রাত পোহালেই গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর টানা ১৮ দিনের জমজমাট প্রচারণা শেষে আজ মঙ্গলবারের রাত পোহালেই আগামীকাল বুধবার সকাল থেকেই শুরু হবে ইভিএমে (ইলেকট্রিক ভোটং মেশিন) ভোট গ্রহণ।
সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই আসনের দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষসহ ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। উপ-নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণসহ ভোটের মাঠে সহিংসতা এড়াতে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকছে সবগুলো ভোট কেন্দ্রই। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানো শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণের সকল সরঞ্জাম।
এই আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার গত ২২জুলাই মৃত্যুর পর ২৪ জুলাই আসনটি শুন্য ঘোষনা করে সংসদ সচিবালয়। নিয়ম অনুযায়ী কোনো আসন শুন্য ঘোষণা করা হলে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী আগামীকাল ১২ অক্টোবর বুধবার এই আসনে ভোটগ্রহণ করবেন নির্বাচন কমিশন।
এই সংসদ উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যে। জাতীয় পার্টির দূর্গ হিসেবে পরিচিত আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া জাপা। কিন্তু কোন অবস্থাতেই আসনটি ছাড় দিতে রাজি নন আ.লীগ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। লাঙল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু আর কুলা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশ`র জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক) প্রতীক নিয়ে।
সংসদ নির্বাচন এবং সবগুলো ভোট কেন্দ্রে এই প্রথম গাইবান্ধায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোট প্রদান পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানা শঙ্কা কাজ করলেও ভোটারদের এই পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে সব ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। কমিশন ইভিএমের বিষয়ে মাইকিং, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের সচেতন করাসহ ভোটারদের সশরীরে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটদান প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচলনা করার কথাও জানিয়েছে দপ্তরটি।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও রাজশাহী অঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
তিনি আমার সংবাদকে বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে আসনের ১৪৫ টি ভোট কেন্দ্রেই থাকছে সিসি ক্যামেরা।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএমের বিষয়ে নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ ছাড়াও মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে সচেতন করা হয়েছে এবং ৮ ও ১০ অক্টোবর তারিখে ভোটারদের স্বশরীরে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চালানো হয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ১৪৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৯৫২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ১৯০৪ জন পোলিং অফিসার। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং এসিল্যান্ড, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৬টি মোবাইল টিম মাঠে কাজ করবেন।
এআই