মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Post

‘ওষুধ প্রয়োগে রোগী-চিকিৎসককে আরও সচেতন হতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ওষুধ প্রয়োগে রোগী-চিকিৎসককে আরও সচেতন হতে হবে’

দেশে ওষুধ অনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। রোগীরাও নিজেদের পছন্দমতো ওষুধ ফার্মেসি থেকে কিনে খাচ্ছেন। একইসঙ্গে চিকিৎসকরাও অপ্রয়োজনীয় নানা ওষুধ সেবনে রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় ওষুধের ব্যবহার ও নানাবিধ প্রয়োগে উভয়পক্ষকে সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা-বিশেষজ্ঞরা।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ওয়ার্ল্ড পেশেন্ট সেফটি ডে-২০২২ উপলক্ষে ইউএসএআইডির কারিগরি সহযোগিতায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আয়োজিত ‘ক্ষতি ছাড়া ওষুধ, বিশ্বব্যাপী রোগীর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধের ব্যবহার কমাতে হবে। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজে নিজে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলেন, এটা ভয়ংকর বিষয়। ওষুধ ব্যবহারে আমাদের সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা দেখি যে এখন অনেক মেডিসিনেই নেফ্রটক্সিক উপাদান পাওয়া যায়। এটি যা সিকেডি হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আমার আবেদন থাকবে, বিষয়টি যেন কঠোরভাবে দেখা হয়। কারণ, এটি মানুষের মধ্যে কিডনি ডিজিজ বাড়ার অন্যতম কারণ।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি অনুষদের প্রধান ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, একজন ফার্মাসিস্টকে বাদ দিয়ে ড্রাগ সেফটি নিশ্চিত করা যাবে না। আমরা ফার্মাসিস্ট কাদের বলি, যারা গ্রাজুয়েট কমপ্লিট। তিন মাসের ট্রেনিং দিয়ে ড্রাগ সেফটি নিয়ন্ত্রিত হয়? সি গ্রেডের ফার্মাসিস্ট বিশ্বের কোথাও নেই।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শমতো রোগীদের ওষুধ দেওয়ার কাজটি করেন একজন ফার্মাসিস্ট। এরপর খাওয়ার বিষয়টি দেখেন নার্স। এক্ষেত্রে প্রত্যেককেই সচেতনতা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সীতেশ চন্দ্র বলেন, হাসপাতালকে অবশ্যই তার ড্রাগের কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট থাকে না। ওষুধের দায়িত্ব দেওয়া হয় চিকিৎসককে। কিন্তু তিনি নানা ব্যস্ততায় সময় দিতে পারেন না। যে কারণে ওষুধের ব্যবহারটা অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, আমরা অনেকেই চেম্বারে রোগী দেখি। সেখানে রোগীকে ওষুধের বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের পক্ষে তা হয়ে উঠে না। প্রতিনিয়ত ও আমাদের এত সংখ্যক রোগী দেখতে হয়, যে এটা অনেকটাই কঠিন। পাশাপাশি আমাদের চিকিৎসকের সংখ্যাও রোগীর তুলনায় অনেক কম।

ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, অনেক ওষুধের নামই একদম পাশাপাশি রকমের হয়। এতে রোগীদের বুঝতে সমস্যা হয়। বিষয়টি ঔষধ প্রশাসনকে দেখতে হবে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এক রোগী আরেক রোগীর বেডে গিয়ে বসে আছেন, গল্প করছেন। এই অবস্থায় একজনের ওষুধ গিয়ে আরেকজনকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রোগী জানেনও না। এক্ষেত্রে আইডেন্টিফিকেশনটা জরুরি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে  ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে ওষুধ একটি অপরিহার্য উপাদান। এর উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও রয়েছে। তাই ওষুধ ব্যবহারে রোগী এবং চিকিৎসক উভয়কে সচেতন হতে হবে।

অন্যান্যদের মধ্যে ইউএসএআইডি ও এমট্যাপসের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিরাও ছিলেন এবং তারা মতামত ব্যক্ত করেন।

এবি