শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

শিশুদের হ্যান্ড ফুট মাউথ বাড়ছে, ভয় নয় প্রয়োজন সচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশুদের হ্যান্ড ফুট মাউথ বাড়ছে, ভয় নয় প্রয়োজন সচেতনতা

সম্প্রতি শিশুদের মধ্যে ‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ’ নামক ভাইরাসজনিত রোগ দেখা যাচ্ছে। ‘কক্সাকি’ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। সাত বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। ফলে অভিভাবকরা এটা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, অতি সংক্রামক এ ভাইরাস দ্রুত ছড়ালেও ভয়ের কিছু নেই।

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ’ মূলত ফিকো-ওরাল রুট, নাকের পানি, থুথু ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। হাত ও পায়ের র‌্যাশ হলে সেটার সংস্পর্শেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির জামা কাপড়, গ্লাস ব্যবহার করলেও এ ভাইরাস ছড়াতে পারে। এ রোগ কয়েকদিনের মধ্যেই সেরে যায় জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা ছোঁয়াচে এ রোগ প্রতিরোধের উপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন।

আক্রান্ত শিশুদের স্কুলে না পাঠিয়ে বাসায় আলাদা পরিচর্যার কথা বলেছেন এবং আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সারাবন তহুরা।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের শিশুদের হ্যান্ড-ফুট, অ্যান্ড মাউথ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অতি সংক্রামক রোগটি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা দেখা যাচ্ছে। তবে এটি ‘গুরুতর বা প্রাণঘাতী’ না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ছে না। এজন্য রোগ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে, বাসায় আলাদা রেখে পরিচর্যা করা জরুরি।

এই শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, কক্সেকিভাইরাস নামের একটি ভাইরাসের আক্রমণে এ রোগ হয়। রোগ হলে শুরুতে শিশুর জ্বর কিংবা অস্বস্তির ভাব হয়। দুই-তিন দিনের মধ্যে হাত, পা, হাঁটু ও মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। শরীরে ব্যাথা হয়। অনেক শিশুর মুখের ভেতর তালুতে ঘা হয়। এতে শিশুরা খেতে পারে না। অনেকের জ্বর হয় না। ফুসকুড়ি সাধারণত এক সপ্তাহ থাকে, এরপর সেরে যায়।

এ রোগে শিশুর চিকিৎসা নিয়ে ডা. সারাবন তহুরা বলেন, আসলে এর কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই। ফুট-মাউথে আক্রান্তদের জ্বর হলে সাধারণ জ্বরের ওষুধ দিতে হবে। আর অ্যান্টিহিস্টামিন দিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। সাধারণত অসুখবিসুখ হলে শিশুরা কম খাবার-দাবার গ্রহণ করে। এ ক্ষেত্রেও খাবারের জন্য জোর-জবরদস্তির করা যাবে না। শিশু কিছু কম খেলে ক্ষতি নেই। মুখের ভেতরে ফুসকুড়ি ওঠায় কম খেতেই পারে। কিন্তু বারবার পানি খাওয়াতে হবে। একটি বিষয় সতর্কভাবে দেখতে হবে, শিশুর প্রস্রাব যেন স্বাভাবিক হয়।

হ্যান্ড-ফুট-মাউথ নিয়ে ভীতির কোনো কারণ নেই। এটা স্বাভাবিক একটি ভাইরাসবাহিত অসুখ। অসুখ হওয়ার পর সাত/আট দিনের মধ্যে এটি সেরে যায়। অভিভাবকদের সচেতনতা একটি বড় বিষয়। এ রোগ যেন অন্যদের মধ্যে ছড়াতে না পারে, সে জন্য তাদের সচেতন হতে হবে। মারাত্মক ছোঁয়াচে এ রোগ যাতে ছড়াতে না পারে, বাড়তি সতর্কতার দিকটি সেখানেই।

এবি