সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

কানাডায় সামুদ্রিক ঝড় লি’র আঘাতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন লাখো মানুষ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কানাডায় সামুদ্রিক ঝড় লি’র আঘাতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন লাখো মানুষ 

কানাডায় আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় লি। আটলান্টিক মহাসাগরে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় অবস্থান করার পর ঝড় লি স্থানীয় সময় শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশের সুদূর পশ্চিমাঞ্চলে হারিকেনের মতো শক্তিশালী বাতাস নিয়ে আছড়ে পড়ে।

এদিকে এই ঝড়ের আঘাতে উত্তর আটলান্টিক উপকূলে বহু রাস্তা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে, অসংখ্য গাছ উপড়ে গেছে এবং লাখো মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ঝড়-সম্পর্কিত অন্তত একটি প্রাণহানির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে একটি গাড়ির ওপর গাছ পড়ে গেলে গাড়িচালক মারা যান বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) তার সর্বশেষ সতর্কতায় বলেছে, শনিবার হ্যালিফ্যাক্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে ছোট দ্বীপ লং আইল্যান্ডে আছড়ে পড়ার পর ঝড় লি উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শক্তিশালী এই ঝড়ে এখনও জোরালো দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৫ মাইল (১০০ কিমি) বেগে বাতাস বয়েছে।

রয়টার্স বলছে, লি এখন মেইন অঙ্গরাজ্যের ইস্টপোর্ট থেকে প্রায় ৪০ মাইল (৬০ কিমি) পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে এবং হ্যালিফ্যাক্স থেকে প্রায় ১৩০ মাইল (২১৫ কিমি) পশ্চিমে অবস্থান করছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ধীরে ধীরে ঝড়টি দুর্বল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ঝড় লি মেইন অঙ্গরাজ্যের উপকূলীয় এলাকা এবং আটলান্টিক মহাসাগরের কানাডার উপকূলীয় কিছু অংশে শক্তিশালী বাতাস, উপকূলীয় বন্যা এবং ভারী বৃষ্টি বয়ে এনেছে। শনিবার কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশে ঝড়ের কারণে জোরালো বাতাসে বহু গাছ ও বিদ্যুতের লাইন ভেঙে পড়ে।

এতে করে শনিবার দেশটির ওই অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া নোভা স্কটিয়া প্রদেশের প্রতিবেশী নিউ ব্রান্সউইকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছে।

নোভা স্কোটিয়া ইলেকট্রিক ইউটিলিটির ম্যাট ড্রভার শনিবার বলেন, ক্রুরা কিছু গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ... তবে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যখন বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ কিমির (প্রায় ৫০ মাইল) ওপরে থাকে, তখন পরিস্থিতি আমাদের ক্রুদের জন্য নিরাপদ নয়।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, পশ্চিমের কিছু অংশে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিমি (৬২ মাইল) পর্যন্ত উঠেছে এবং নোভা স্কটিয়া প্রদেশের বৃহত্তম শহর হ্যালিফ্যাক্সের ডাউনটাউনে বাতাসের গতিবেগ উঠেছে ঘণ্টায় ৯০ কিমির (৫৬ মাইল) বেশি। পরিস্থিতি বিবেচনায় হ্যালিফ্যাক্স বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

নোভা স্কোটিয়া ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট অফিসের নির্বাহী পরিচালক পল ম্যাসন বলেন, ‘ঝড়ের তীব্রতা শক্তিশালী। বিকেল থেকে সন্ধ্যার প্রথম দিকে ঝড়ের তীব্রতা সবচেয়ে শক্তিশালী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

অন্যদিকে পাওয়ারআউটেজেস.ইউএস ওয়েবসাইট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যের প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক শনিবার রাতেও বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে ছিলেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টার ম্যাসাচুয়েটস থেকে নোভা স্কোটিয়া পর্যন্ত সুদীর্ঘ উপকূলীয় এলাকাজুড়ে হ্যারিকেনের সতর্কতা জারি করেছিল। সংস্থাটি সতর্কতায় জানায়, এই ঝড়ের কারণে ৯০ লাখ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন।

মার্কিন হারিকেন সেন্টার আরও জানায়, হারিকেন লি এর কারণে নিউ ইংল্যান্ডে ১ থেকে ৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে। এছাড়া ঝড়টির কারণে ২ থেকে ৫ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

টিএইচ