মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

ট্রাম্পের মন্তব্যে উদ্বিগ্ন গোটা ইউরোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ট্রাম্পের মন্তব্যে উদ্বিগ্ন গোটা ইউরোপ

এদিকে- ন্যাটোর শরিক দেশগুলি যদি তারা তাদের ভাগের অর্থ না দেয়, তাহলে যা খুশি করার জন্য রাশিয়াকে উৎসাহিত করবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার এক প্রচারসভায় ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে ইউরোপের দেশগুলিতে আতঙ্কের স্রোত বয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের জেতার একটা সম্ভবনা থাকার কারণও জানা যায়।

ন্যাটোর এ মূল বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে গোটা ইউরোপকে মহা উদ্বিগ্নে ফেলে দিল ট্রাম্প। তবে ক্ষতি যা হওয়ার তাতো আগেই হয়ে গেছে।

এরইমধ্যে ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেছেন, ‘ন্যাটো কখনই এমন কোনো সামরিক জোট নয়, যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের রসিকতার উপর নির্ভর করে।’ 

এরপর ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল স্টলটেনবার্গ এক বিবৃতিতে জানান, ‘ন্যাটোর শরিকদের নিয়ে ট্রাম্প যা বলেছেন, তার প্রভাব অ্যামেরিকা ও ন্যাটোর শরিক দেশের উপর সমানভাবে পড়বে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় সেনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।’

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ন্যাটো থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন অনেকবার। তিনি একাধিকবার বলেছেন, অ্যামেরিকা যে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে, তার জন্য ইউরোপকে অর্থ দিতে হবে। এর ফলে ন্যাটোর চুক্তির বহু আলোচিত পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদ পালন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ন্যাটোর কোনো একটি দেশ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে ইউরোপ ও অ্যামেরিকা সেই আক্রমণকে নিজেদের উপর আক্রমণ হিসাবে দেখবে এবং তা প্রতিহত করবে।

মূল ঘটনা হলো, ট্রাম্প আবার ন্যাটো নিয়ে সেই বিতর্কিত কথা বললেন। কূনীতিকদের মতে, প্রচারে নেমে এই কথা বলাটা খুবই উদ্বেগজনক। ন্যাটোর অনেক শরিক দেশই মনে করে, ট্রাম্প যদি আবার জিতে আসতে পারেন, তাহলে তিনি আগেরবারের থেকে অনেক বেশি করে শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবেন।

এছাড়া ট্রাম্পের এই হুমকি এমন একটা সময়ে এসেছে, যখন ইউক্রেনে রাশিয়া আরো তীব্র আক্রমণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, যখন কিয়েভের জন্য নতুন প্যাকেজে সায় দেয়নি মার্কিন কংগ্রেস, ইউরোপের দেশগুলি তাদের অস্ত্রের উৎপাদন বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে।

এদিকে মার্কিন থিংক ট্যাংক জার্মান মার্শাল ফান্ড ইস্ট-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিশেল বারানওস্কি বলেছেন, ‘ট্রাম্পের মন্তব্য থেকে এই সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে যে, তিনি ক্ষমতায় এলে রাশিয়া ন্যাটোর শক্তি পরীক্ষা করবে।’ 

তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্পের মন্তব্য ইউরোপের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা বাড়িয়েছে। ইউরোপের কোনো দেশের উপর আক্রমণ হলে অ্যামেরিকা পাশে দাঁড়াবে কিনা, সেই চিন্তা স্বাভাবিকভাবেই দেখা দিয়েছে।’

অন্যদিকে ব্রাসেলসের কূটনীতিকদের মুখেও একই চিন্তার কথা শোনা যাচ্ছে। তারা ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় জানাচ্ছেন, ট্রাম্পের মন্তব্যের ফলে এই সামরিক জোটের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। ট্রাম্প যা বলেছেন তা হেঁয়ালির মতো। কারণ, ইউরোপের দেশগুলির সামনে এমন কোনো বিল নেই, যা তাদের ভরতে হবে।

সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের কথার মধ্যেও যুক্তি আছে। এদিকে সুর বদলে এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ট্রাম্পের কথায় ইউরোপের কিছু দেশের অন্তত ঘুম ভাঙবে।’

টিএইচ