ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে ১৭ ঘণ্টা। এখনও চলছে উদ্ধার অভিযান। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনাস্থলের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানুষের হাত, পা, মাথাসহ নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে পচন ধরতে শুরু করেছে। ফলে দুর্গন্ধে ভরে গেছে পুরো দুর্ঘটনাস্থল।
দুর্ঘটনাকবলিত দুই যাত্রীবাহী ট্রেনের বগিগুলোতে প্রথম দফায় উদ্ধার অভিযান চালানোর পর সেগুলোতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বারের মতো খোঁজ চালানো হচ্ছে। কেননা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একটি বগি থেকে দ্বিতীয় দফার অভিযানে আরও দুইটি মরদেহ পাওয়া যায়।
জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় উদ্ধার অভিযান শেষ করার পরও মরদেহের পচনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে স্থানীয়দের দাবির মুখে তৃতীয় দফায় উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।
এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে ১ হাজার ২০০ মানুষ। পাশাপাশি ২০০টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫০টি বাস এবং ৪৫টি মোবাইল হেলথ ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। ট্রাক্টরসহ সব ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে মৃতদেহগুলো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
লাইনচ্যুত বগিগুলোর ভেতর থেকে মৃতদেহ বের করে আনতে ‘গ্যাস কাটার’ ব্যবহার করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মী এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে উড়িষ্যার বালেশ্বর স্টেশন থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাহানাগাঁ স্টেশনের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮ জন হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯০০ জন।
দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল এসকে দত্ত জানান, সেনাবাহিনী রাত থেকে উদ্ধারকাজে রয়েছে এবং কলকাতা থেকে আরও সেনা সদস্য ডাকা হয়েছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর হাওড়াগামী ৪২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে রুট পরিবর্তন করা হয়েছে অনেক ট্রেনের।
এই দুর্ঘটনায় একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। এসময় কোনো উৎসব হবে না। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাও বিজেপির সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করেছেন।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মনোযোগ ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে। কিছু মৃতদেহ এখনও অনেক ট্রেনের বগিতে আটকে আছে যা বের করার চেষ্টা চলছে।’
টিএইচ