সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারি শেষ: বাইডেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারি শেষ: বাইডেন

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারির শেষ ঘোষণা করে বলেছেন, আমরা এখনও এ মহামারি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এটি শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিবিএস টেলিভিশনের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারি শেষ হয়ে বলে জানান।

সাক্ষাৎকারটি গত রোববার সম্প্রচারিত হলেও এর অংশবিশেষ ধারণ করা হয়েছিল ডেট্রয়েট অটো শো’র সময়। এদিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন জনতার সঙ্গে ছিলেন।

প্রচারিত সাক্ষাৎকারে বাইডেনকে বলতে শোনা যায়, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এখনও আমরা প্রচুর কাজ করছি। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। যদি লক্ষ্য করেন, দেখা যাচ্ছে কেউ মাস্ক পরেননি। এর মানে দাঁড়ায় প্রত্যেকে বেশ ভালো অবস্থায় আছে। আমি মনে করি, এটা পরিবর্তন হচ্ছে।

মহামারির শেষ দেখলেও বাইডেন মনে করেন, চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে মার্কিনিদের মানসিকতার ওপর ‘গভীর’ প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, এটি সবকিছু বদলে দিয়েছে। নিজের, পরিবারের, জাতির ও সম্প্রদায়ের অবস্থা সম্পর্কে মানুষের মনোভাব পাল্টে দিয়েছে। খুব কঠিন একটা সময় পার করেছি আমরা; খুবই কঠিন।

বাইডেন মহামারির শেষ ঘোষণা দিলেও যুক্তরাষ্ট্রে সংশ্লিষ্ট নীতির কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তারা মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেছে, চলমান কোভিড-১৯ জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

সোমবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগের প্রধান ডা. অ্যান্থনি ফাউসিও পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তবে, ওয়াশিংটন ডিসি থিঙ্ক ট্যাঙ্কে তিনি দৈনিক মৃত্যুর হার অগ্রহণযোগ্যভাবে বেশি রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন।

তারপরও সতর্কবার্তা দেন এ চিকিৎসক। বলেন, কোভিড-১৯ এর নতুন রূপগুলো আবারও আবির্ভূত হতে পারে; বিশেষত শীতের মাসগুলোয়।

গত আগস্টে মার্কিন কর্মকর্তারা জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার মেয়াদ আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছিলেন। ২০২০ সাল থেকে এ অবস্থা জারি রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ডেটা থেকে জানা গেছে, এখন সাত দিনের গড় মৃত্যু চারশোরও বেশি। গত সপ্তাহে তিন হাজার জনের বেশি মারা গেছে।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে করোনায় এক একটি সপ্তাহে ২৩ হাজার জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশের পুরোপুরি টিকাপ্রাপ্ত বলে মনে করা হচ্ছে। দেশটিতে কিছু ফেডারেল ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট বহাল রয়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, সামরিক কর্মী এবং কিছু অ-মার্কিন নাগরিকদের বিমানযোগে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকার বিধান পালন করতে হচ্ছে।

এদিকে, বাইডেনের ঘোষণায় আপত্তি আছে শীর্ষ রিপাবলিকানদের মধ্যে। তারা প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও টুইট করে বলেছেন, বাইডেন এখন বলছেন মহামারি শেষ, কারণ তিনি তার কোভিড ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট দিয়ে কয়েক হাজার সুস্থ সৈন্যকে সামরিক বাহিনী থেকে বের করে দিচ্ছেন।

দেশটির জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। তাদেরও ধারণা বিশ্ব করোনা মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের দিকে এগিয়ে চলেছে। তবে, মানুষকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছেন তারা।

এর আগে গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসাস বলেছিলেন, বিশ্ব মহামারি শেষ করার মতো ভালো অবস্থানে কখনও ছিল না। আমরা এখনও সেখানে নেই। কিন্তু এর শেষ দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, তারপর ভারত ও ব্রাজিলে। সূত্র: বিবিসি

এবি