শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল দাবি হামাসের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল দাবি হামাসের

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস, তাতে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল। গোষ্ঠীর মুখপাত্র খলিল আল হায়া শনিবার কাতার থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিবৃতিতে খলিল আল হায়া বলেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল মিসর ও কাতারের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে (যুদ্ধবিরতির) যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, তাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে ইহুদি দখলদার শক্তি।’

গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারের গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জনকে।

জবাবে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত ছয় মাস ধরে চলমান সেই অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও বেসামরিক লোকজন।

কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা-দূতিয়ালিতে গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করেছিল হামাস-আইডিএফ। সেই বিরতির সময় নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৫০ জনকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরায়েলও।

ওই বিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করছিল মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ। চলতি বছর রমজান মাস থেকে তা শুরু হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু মূলত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আপত্তির কারণে তা আর হয়নি।

ফলে হামাসের কব্জায় থাকা বাকি ১৩২ জন জিম্মির ভাগ্য কী ঘটেছে— এখনও অজানা।

কাতার এবং মিসরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য প্রথম দফা বিরতির পর ২য় বার যুদ্ধবিরতির জন্য একাধিক বার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে। কিন্তু প্রতিটি প্রস্তাবে হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এবং এই দাবির কারণে সেসব প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি ইসরায়েল।

দুই পক্ষের মতানৈক্যের কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসন এবং জিম্মিদের মুক্তির পথ তৈরি করতে বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে যায় মিসরের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। এদিকে, ওই দিনই হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য গোষ্ঠীটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৭টি দেশ।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা গত ১২ বছর ধরে কাতারে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। সম্প্রতি কাতার ইঙ্গিত দিয়েছে, যদি গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে হামাসের ভূমিকা ইতিবাচক না হয়— তাহলে কাতার ছাড়তে হবে গোষ্ঠীটির নেতাদের।

বৃহস্পতিবার ১৭টি দেশের চিঠি প্রসঙ্গে প্রাথমিক এক প্রতিক্রিয়ায় হামাস নেতারা বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক চাপের কাছে তারা মাথা নত করবেন না। তবে কয়ে ঘণ্টা পরই তারা ফের বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে কোনো প্রস্তাবকে হামাস স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।’

মিসরের প্রতিনিধিদলের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ১৩ এপ্রিল পাঠানো প্রস্তাবে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মতি জানিয়েছে হামাস। সূত্র : রয়টার্স

টিএইচ