কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে জনসন বলেন, এটা করা ঠিক হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
সংবাদসংস্থা বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, রোববারই (২৩ অক্টোবর) বরিস জনসন ঘোষণা করেন যে তিনি টোরি নেতৃত্বের লড়াইয়ে অংশ নেবেন না। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “আগামী ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয় আনার জন্য আমি প্রস্তুত।
কিন্তু বিগত কয়েকদিনে আমি বুঝতে পেরেছি যে এটা (প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে অংশ নেওয়া) সঠিক হবে না। যতক্ষণ না সংসদে আপনার সংঘবদ্ধ দল থাকছে, ততক্ষণ আপনি দক্ষভাবে সরকার চালাতে পারবেন না। সেই কারণেই আমি নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে যেই জিতুক না কেন, তার প্রতি আমার সমর্থন রইল।”
যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌঁড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বরিস জনসন, ফলে ক্ষমতাসীন দলটির এমপিদের সমর্থনের দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকা ঋষি সুনাক পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জনসন জানান, ক্ষমতাসীন দলের ১০২ জন এমপি তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন; কিন্তু বিবিসি জানিয়েছে, জনসনের এ দাবি যাচাই করতে সক্ষম হয়নি তারা কারণ প্রকাশ্যে মাত্র ৫৭ জন এমপি তার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে লিজ ট্রাস পদত্যাগ করার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে ক্যারিবীয় অঞ্চলে অবকাশযাপনরত জনসন ছুটি সংক্ষিপ্ত করে লন্ডনে ফিরে গিয়েছিলেন, তারপর সোমবার দুপুরের (স্থানীয় সময়) মধ্যে ১০০ টোরি এমপির সমর্থন নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে সেপ্টেম্বরে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌঁড়ে ঋষি সুনাককে হারিয়ে লিজ ট্রাস ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।
তখন ধারাবাহিক কয়েকটি কেলেঙ্কারির ঘটনার পর জনসন চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাসও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি, ব্রিটিশ ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের ৪৫ দিন পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
জনসন তার পক্ষে ১০২ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন আছে এবং তিনি ‘ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরতে পারবেন’ বলে দাবি করলেও ‘জাতীয় স্বার্থে’ সুনাক বা আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মর্ডান্টকে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারে রাজি করাতে পারেননি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার রাত পর্যন্ত জনসনের প্রতি প্রকাশ্যে মাত্র ৫৭ কনজারভেটিভ এমপি সমর্থন জানালেও ততক্ষণে সাবেক অর্থমন্ত্রী সুনাকের প্রতি প্রায় ১৫০ জন সমর্থন জানিয়ে ফেলেছিলেন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে জনসন সরে দাঁড়ানোয় তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সুনাকের (৪২) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ সম্ভবত প্রশস্ত হয়ে গেছে, সোমবারের মধ্যেই তার ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।
আর যদি দুই জন প্রার্থী ওই সীমা অতিক্রম করতে পারেন, তাহলে পার্টির সদস্যদের ভোটে তাদের মধ্যে একজন দলের নেতা নির্বাচিত হবেন। শুক্রবার ফল ঘোষণা করা হবে আর কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচিত নতুন নেতাই পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হবেন।
টিএইচ