বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মন্তব্য নিয়ে ‘বিতর্ক’ থামছেই না। ঢাকার আপত্তির পরে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে মুখ খুলেছিল।
তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে পালটা জবাব দিলেন মমতা। গতকাল শুক্রবার তিনি বলেন, পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে আমি অনেকের চেয়ে ভালো জানি।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার দিল্লিতে যান মমতা। আজ শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গেছেন তিনি। তার আগে গতকাল দিল্লির বঙ্গভবনে দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকও করেন মমতা।
দিল্লিতে বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভালো জানি। আমি সাতবারের সংসদ সদস্য, দুইবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। পররাষ্ট্রনীতি অন্য কারো চেয়ে ভালো জানি। তাদের আমাকে শেখানো উচিত নয়। বরং তাদের পরিবর্তিত ব্যবস্থা থেকে শেখা উচিত।
গত ২১ জুলাই শহিদ মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে কেউ পশ্চিমবঙ্গের দরজায় এলে তিনি ফেরাবেন না। তবে সেই সঙ্গেই তিনি জানান, এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারবেন না। কারণ, বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ। এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে ভারত সরকার বলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু মমতার এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা করে বিজেপি। তাদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই বিষয়ে মন্তব্য করার এক্তিয়ার নেই।
মমতার মন্তব্যে আপত্তি জানায় ঢাকাও। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, মমতা ব্যানার্জির প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার ঐ বক্তব্যের জেরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, এ ব্যাপারে ভারত সরকারকে ‘নোট’ দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রতিবাদপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। অন্যদিকে, মমতাকেও কার্যত সংবিধানের পাঠ দিয়ে জানানো হয়েছে, অন্য কোনো দেশ বা বৈদেশিক বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার কোনো রাজ্য সরকারের নেই। সংবিধান সেই অধিকার দেয়নি রাজ্যকে। এ নিয়ে বলার এক্তিয়ার শুধু ভারত সরকারেরই আছে। সেই প্রসঙ্গেই মমতা ব্যানার্জি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আক্রমণ করেন।
টিএইচ